আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২ জুলাই, ২০১৪

মধ্যবিত্তের রোজা-নামচা

লিছেছেন বিলুপ্ত মধ্যবিত্ত

গতকালের মতো আজও রোজা রেখেছিলাম, রোজা আল্লাহর হুকুম, আল্লাহর হুকুম অমান্য করার সাধ্য কারও নেই। গতকাল রোজাদারদের সম্মানে যে কোনো হোটেল বা চায়ের দোকান পর্যন্ত বন্ধ ছিলো, মুসলিম দেশে রোজার মাসে খাবার দোকান বন্ধ থাকাটাই নিয়ম। যদিও আজ শহরের অনেক খাবার দোকানই খোলা ছিলো, তাতে কারও তেমন সমস্যা হয়নি। ইসলাম ছোট-বড়-বুড়ো-বিধর্মী-নাস্তিক সকলের, শান্তি নষ্ট করে কারও সমস্যা তৈরি করা ইসলামের কাজ নয়, তাই ইসলামই একমাত্র শান্তির ধর্ম।

আমি ভোর রাতে রোজার নিয়ত করে বৌয়ের সাথে সেহরী খেয়েছি, সকালে ফজর নামাজ পড়ে একটু হাঁটতে বেরিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে টুপ করে এক বোরকাওয়ালা চায়ের দোকানে ঢুকে চা খেয়ে একটি সিগারেট ধরালাম। ক্ষিদেয় আমার সমস্যা হয় না, কিন্তু সিগারেট-চা না হলে দিনের শুরুই যে করতে পারি না! মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, খিটখিটে মেজাজের চেয়ে সিগারেট আমার প্রিয়।

দুপুর গড়াতেই পেটের ক্ষিদেটা নাড়া দিয়ে উঠলো, অফিসের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালাম, আর পারছি না। গতকাল খুব কষ্ট হলেও সেই বোকামী কাজ আজ আর করবো না। নামাজের কথা বলে মসজিদমুখী রওয়ানা দিলাম। কিসের মসজিদ! টুপিটা খুলে আস্তে আস্তে হাঁটতে হাঁটতে ধানমন্ডির এক রেস্তোরায় ঢুকে পড়লাম। কাচ্চি বিরিয়ানী, টিকা-কাবাব, বোরহানি দিয়ে লাঞ্চ সেরে আবার সময় মতো টুপি মাথায় দিয়ে অফিসে ঢুকলাম। কী শান্তি! গ্যাসের রোগী, খালি পেটে কেমনে থাকি? হোটেল থেকে বেরিয়ে আবার টুপিটা মাথায় দিলাম। রোজার দিনে টুপি মাথায় রাখলে শয়তানে ধোঁকা দিতে পারে না।

বয়টাকে পাঠালাম ইফতার আনতে, আগে শরবত ভিজিয়ে রাখতে বললাম। বললাম, আছর নামাজে আর মসজিদে যাবো না, আমার রুমেই পড়ে নেবো। দরজা ভেজিয়ে দিলাম, এখন আমি কিছুক্ষন একা থাকবো। একা থাকলে আমার বড়ই তৃষ্ণা পায়, আমি শরবতের জগ থেকে ডাইরেক্ট চুমুক দিলাম, মিষ্টি কম হয়েছে আরো চিনি দিতে বলতে হবে। কিন্তু কীভাবে বলি? বয়টাকে শুধু বললাম, সারাদিন রোজার পরে প্রথমই শরবত খাবো, শরবতে যেন চিনি কম না হয়।

যথারীতি ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে, বাহারী দামী আইটেমে সাজানো ইফতার নিয়ে সকলে আজানের অপেক্ষায়। অ্যাকাউন্টস অফিসার খাবারের পূর্বে পবিত্র কোরান পাক থেকে আল্লার কালাম তেলাওয়াত করছেন। রোজা রেখে কোরান তেলোয়াত করা আল্লাহ খুব পছন্দ করেন। আজানের পূর্বেই সে তার সংক্ষিপ্ত মোনাজাত শেষ করেছে, দুনিয়াবী আখেরাতি, কবরবাসী সকলের মঙ্গল এবং নাজাত কামনা করে। আল্লাহ রোজাদারের দোয়া কবুল করবেন বলে অঙ্গীকারাবদ্ধ, আমরা সকলেই মোনাজাতে হাত তুলে পানাহ চাই, নিশ্চয় আল্লাহ পরম করুণাময় এবং ক্ষমাশীল।

আমাদের নবী করিম (সঃ) মাত্র একটা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ইফতারে খেজুর খাওয়া সুন্নত, কিন্তু আমরা একটামাত্র খেজুর খাই না, সেই সাথে আরো হরেক সুস্বাদু আইটেম থাকে, সব জায়গায় সুন্নত রক্ষা করলে চলে না, অন্তত সারাদিন রোজা রাখার পরে। তখন আমাদের অনেক ক্ষিধে পায়, তখন বেশি করে খাওয়াই উত্তম, রোজার মাসে আল্লাহ খাবারের হিসাব নেবে না।

ইফতারের আগেই দু'-তিনজন ভিখিরি এসে অফিসের সামনে চিৎকার করছে। মনে হচ্ছিলো দারোয়ান ডেকে তাড়িয়ে দেই। শালার ভিখিরিদের জন্য ঠিকমতো খাবারও খেতে পারছি না। সারাদিন রোজা থেকে কারও মেজাজ ঠিক থাকে? কিছু মুড়ি আর চানাবুট মিশিয়ে ওদের দিতে বললাম, গরীব ভিখিরিদের রোজার মাসে খাওয়ানো সুন্নাত, তাদের ইফতার করালে দ্বিগুণ ছওয়াব পাওয়া যায়। ভিখিরিরা খাবার পেয়ে আমাদের চৌদ্দগুষ্টির জন্য দু'হাত তুলে দোয়া করতে লাগলো। আল্লাহ ভিখিরিদের দোয়া কবুল করেন, যদিও তাদের নিজেদের ভাগ্য বদলের কোনো অঙ্গীকার আল্লাহতায়ালা কোরানের কোথাও বলেননি। সকলি তার ইচ্ছা, আল্লাহ নিশ্চয় মহান।

ইফতারের পরে সবাই মসজিদে গেলেও আমি আমার রুমে বসেই একটা সিগারেট ধরালাম। সারাদিন অনাহারে থেকে একটা সিগারেট তখন খুবই কার্যকর। আমি মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি, প্রতিবছর আমাদের সকলকে এমন রোজা রাখার তৌফিক দান করুন আমীন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন