আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৪

কুরানে বিগ্যান (পর্ব-৫২): বনি নাদির গোত্রকে উচ্ছেদ ও তাঁদের সম্পত্তি লুট! ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – পঁচিশ

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ০১ > পর্ব ০২ > পর্ব ০৩ > পর্ব ০৪ > পর্ব ০৫ > পর্ব ০৬ > পর্ব ০৭ > পর্ব ০৮ > পর্ব ০৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯ > পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১

বলা হয়, ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল হলো স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এরই স্বরচিত (স্বলিখিত নয়) ব্যক্তিমানস জীবনীগ্রন্থ কুরান।

ইসলামের ইতিহাসের এই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল কুরানে অবিশ্বাসী কাফেররা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের ঠিক কী অত্যাচার করতেন, তার সুনির্দিষ্ট (Specific) উল্লেখ কোথাও নাই। তাঁরা মুসলমানদের যথেচ্ছ হুমকি-শাসানী বা ভীতি প্রদর্শন করতেন, অসম্মান বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতেন, এমন উদাহরণও নাই।

মুসলমানদের প্রতি অবিশ্বাসীদের কথিত অত্যাচারের বর্ণনা অত্যন্ত ভাসা-ভাসা। যেমন, কাফেররা: 

ক) আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে...
খ) আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে...
গ) তোমাদের ধর্মকে উপহাস করে...
ঘ) আল্লাহ ও রসুলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে...
ঙ) ধর্মের ব্যাপারে ফিতনা সৃষ্টি করে...
চ) তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে...
ছ) মসজিদে হারামে যেতে বাধা প্রদান করে...
ঝ) তারা রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করে...
ঞ) তারা ভঙ্গ করেছে নিজেদের শপথ... ইত্যাদি, ইত্যাদি।

[অবিশ্বাসীরা কেন মুহাম্মদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তার বিস্তারিত আলোচনা সতের, আঠার, উনিশ, তেইশ, চব্বিশ ও পঁচিশ-তম পর্বে করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আরও আলোচনা আইয়্যামে জাহিলিয়াত তত্ত্বে করা হবে।]

এই ভাসা-ভাসা বিবরণকেই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ইসলামী পণ্ডিত ও অ-পণ্ডিতরা মুহাম্মদের যাবতীয় অমানবিক কর্মকাণ্ড ও জিহাদের বৈধতার সাক্ষ্য হিসাবে উপস্থাপন করেন। অবিশ্বাসীরা কোনো মুহাম্মদ-অনুসারী মুসলমানকে খুন করেছেন কিংবা শারীরিক আঘাত করেছেন, এমন উদাহরণ “সমগ্র কুরানে একটিও নেই”

অন্য দিকে, আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যে কী পরিমাণ হুমকি-শাসানী, ভীতি প্রদর্শন, অসম্মান, দোষারোপ ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন, তা কুরানের পাতায় পাতায় বর্ণিত আছে। অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে মুহাম্মদের এ সব হুমকি শুধু মৌখিক হুঁশিয়ারিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা অমানুষিক ও সন্ত্রাসী কায়দায় কীভাবে অমুসলিমদের হামলা করেছিলেন; খুন করেছিলেন; নির্যাতন করেছিলেন (মুক্ত মানুষকে চিরদিনের জন্য বন্দী); তাঁদেরকে ভিটে মাটি থেকে উৎখাত করে তাঁদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি লুট করেছিলেন, তা মুহাম্মদ তাঁর নিজের জবানবন্দিতেই (কুরান) অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছেন!

মুহাম্মদ তাঁর নৃশংস সন্ত্রাসী (terror) কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মদিনায় নিজেকে এক ক্ষমতাধর নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন (বুখারী: ৪:৫২:২২০)। [1]

সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তাঁর প্রতিটি সহচরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ ছিল বাধ্যতামূলক। মুহাম্মদ তাঁর ১০ বছরের মদিনা জীবনে (৬২২-৬৩২) ৬০ টিরও বেশী, মতান্তরে ১০০ টি, যুদ্ধ/সংঘর্ষে জড়িত ছিলেন। গড়ে প্রতি ৫-৮ সপ্তাহে একটি!  ইসলামে নিবেদিতপ্রাণ বিশিষ্ট আদি মুসলিম ঐতিহাসিকদের (ইবনে ইশাক/আল-তাবারী প্রমুখ) মতে এই বিপুল সংখ্যক সংঘর্ষের মাত্র দুটি (ওহুদ ও খন্দক) ছাড়া আর কোনোটিই তাঁর আত্মরক্ষার নিমিত্তে ছিল না।

ইসলামের ইতিহাসের এ সকল বিখ্যাত আদি মুসলিম পণ্ডিতরা তাঁদের লেখনীতে এই ওহুদ ও খন্দক যুদ্ধের যে-পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা করেছেন, তারই আলোকে আমরা যে সত্যে উপনীত হতে পারি, তা হলো - এই ওহুদ ও খন্দক যুদ্ধও ছিল রাতের অন্ধকারে বাণিজ্য-ফেরত কুরাইশ কাফেলার ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর সহচরদের চোরাগোপ্তা হামলায় (ডাকাতি) অতিষ্ঠ কুরাইশদের প্রতিরক্ষা যুদ্ধ।

সর্বাবস্থায় মুহাম্মদ ও তাঁর বাহিনীই ছিল প্রথম আক্রমণকারী ও আগ্রাসী! আক্রান্ত জনগোষ্ঠী করেছেন তাঁদের জান-মাল ও ধর্ম রক্ষার চেষ্টা! আত্মরক্ষার চেষ্টা! বশ্যতা অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের কীরূপে এই বিপুল সংখ্যক আক্রমণাত্মক (Offensive), অন্যায়, অমানবিক, নিষ্ঠুর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাধ্য করেছিলেন, তার বিবরণ মুহাম্মদের ব্যক্তিমানস জীবনীগ্রন্থে (কুরান) বর্ণিত আছে।

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কী অজুহাতে মদিনায় অবস্থিত বনি-কেইনুকা নামক এক ইহুদি গোত্রের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, মহিলা ও শিশুসহ সমস্ত মানুষকে তাঁদের শত শত বছরের পৈত্রিক ভিটে-মাটি  থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি লুণ্ঠন ও করায়ত্ত করেছিলেন, তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার বিবরণে আমরা আরও জেনেছি যে, সেদিন যদি আবদুল্লাহ বিন উবাই নামের এক আদি মদিনাবাসী মুহাম্মদ অনুসারী (আনসার) মুহাম্মদের এই কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ না করতেন, তবে বনি কেইনুকা গোত্রের সমস্ত মানুষকে (৭০০ জন) মুহাম্মদ এক সকালের মধ্যেই খুন করতেন।

বনি-কেইনুকা গোত্রের মতই মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা বনি নাদির গোত্রের সমস্ত মানুষকে তাঁদের বংশ পরম্পরায় বসবাসরত শত শত বছরের আবাসভূমি ও ভিটে-মাটি থেকে উচ্ছেদ করে তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি লুট করেন!

মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা বনি নাদির গোত্রকে কী কারণে তাঁদের ভিটে-মাটি থেকে উচ্ছেদ করেছিলেন, তার বিশদ বিবরণ নিবেদিতপ্রাণ আদি মুসলিম ঐতিহাসিকরা লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।

কী সেই কারণ?

মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খ্রিষ্টাব্দ), আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), মুহাম্মদ ইবনে সা'দ (৭৮৪-৮৪৫ সাল) ও আল-তাবারীর (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ) প্রমুখ আদি ঐতিহাসিকরা সেই ঘটনাটির বর্ণনা বিভিন্নভাবে তাঁদের নিজ নিজ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।

বনি নাদির গোত্রকে উচ্ছেদ ও তাদের স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি লুট

মুহাম্মদ ইবনে ইশাক ও আল-তাবারীর বর্ণনা:

হিজরতের চতুর্থ বর্ষে (৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ) আল্লাহর নবী বনি নাদির গোত্রকে তাঁদের ভিটে-মাটি থেকে বিতাড়িত করেন। কারণটি ছিল:

‘আমর বিন উমাইয়াহকে আল্লাহর নবী 'বীর মাউনাহ' অভিযানে পাঠান।

সেই অভিযান আমর বিন উমাইয়াহ আল দামরির বনি আমির গোত্রের দু'জন লোককে খুন করে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করে।

আল্লাহর নবী উক্ত গোত্রকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি পাশে আবদ্ধ ছিলেন। আমর বিন উমাইয়াহর এই জোড়া খুনের রক্ত-মূল্য পরিশোধের ব্যাপারে আল্লাহর নবী বনি নাদির গোত্রের কাছে যান এবং তাদেরকে এই রক্ত-মূল্য পরিশোধের আবেদন জানান। বনি নাদির গোত্র ও বনি আমির গোত্র পারস্পরিক চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল।

নবী যখন তাদেরকে রক্ত-মূল্য পরিশোধের আবেদন জানান, তারা বলে যে, অবশ্যই আল্লাহর নবী যেমনটি চাইবেন সেভাবেই তারা তাঁকে সাহায্য করবে।

কিন্তু তারা গোপনে একে অপরের সাথে শলা-পরামর্শ করে এবং বলে, 'এমন সুযোগ তোমরা আর কখনোই পাবে না। কেউ কি বাড়ির ছাদের ওপর উঠে (হত্যার জন্য) তার ওপর পাথর নিক্ষেপ করবে, যাতে আমরা তার থেকে রেহাই পেতে পারি?'

নবী তখন তাদের এক বাড়ির দেয়ালের পাশে ছিলেন। আমর বিন জিহাশ বিন ক্বাব তাদের এই প্রস্তাবে স্বেচ্ছায় রাজি হয় এবং নবীর ওপর পাথর নিক্ষেপের জন্য ওপরে উঠে। সে সময় নবী তাঁর বেশ কিছু অনুসারীদের সঙ্গে ছিলেন। যাদের মধ্যে ছিলেন আবু বকর, ওমর এবং আলী।

আসমানি ঐশী বাণীর মাধ্যমে নবী এই লোকগুলোর অভিপ্রায় জানতে পারেন।

নবী উঠে দাঁড়ান (তাঁর অনুসারীদের বলেন, 'আমি তোমাদের কাছে ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত এখান থেকে কোথাও যেও না') এবং মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন।

অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন নবী ফিরে এলেন না, তখন তাঁর অনুসারীরা নবীকে খুঁজতে বের হন।।

পথে তারা মদিনা থেকে আগমনকারী এক লোকের সাক্ষাত পান। সে লোকটিকে তারা নবীর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন। লোকটি বলে যে, সে নবীকে মদিনায় ঢুকতে দেখেছে।

অনুসারীরা যখন নবীর সন্ধান পান, নবী তাদেরকে তাঁর বিরুদ্ধে ইহুদীদের [বনি নাদির] ঐ প্রতারণার খবরটি অবহিত করান। আল্লাহর নবী তাদেরকে যুদ্ধের প্রস্তুতি সমেত বনি নাদির গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযানের হুকুম দেন। তিনি নিজেও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বনি নাদির গোত্রের ওপর আক্রমণ চালান।

ইহুদি গোত্রটি তাদের দুর্গ মধ্যে আশ্রয় নেয়। নবী তাঁদের পাম-গাছ (তাল-গাছ জাতীয়) কেটে ফেলার এবং পুড়িয়ে ফেলার হুকুম জারি করেন। [কুরান: ৫৯:৫]। তারা চিৎকার করে বলে,

"হে মুহাম্মদ, তুমি না কারও সম্পত্তি ধ্বংস করাকে ভীষণ অন্যায় বলে প্রচার করো এবং এই অপকর্মকারীদের তুমি অপরাধী বলে রায় দাও। সেই তুমিই কেন আমাদের পাম-গাছগুলো ধ্বংস করছো ও পুড়িয়ে দিচ্ছ?" 

বনি আউফ বিন খাযরায বংশের বেশ কিছু লোক বনি নাদির গোত্রকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিল আবদুল্লাহ বিন উবাই বিন সালুল, ওয়াদিয়া, মালিক বিন আবু কাউকাল, সুয়ায়েদ এবং ডেইয়াস। তারা বনি নাদির গোত্রের লোকদের বলে,

“ওঠো ও বাঁচার জন্য প্রতিরোধের ব্যবস্থা নাও। আমরা তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবো না। যদি তোমরা আক্রান্ত হও, তবে আমরা তোমাদের সাহায্যে যুদ্ধ করবো। যদি তোমরা বিতাড়িত হও, আমরা তোমাদের সঙ্গে যাব।"

অত:পর বনি নদির গোত্র তাদের প্রতিশ্রুত সাহায্যের জন্য অপেক্ষায় রইলো। কিন্তু তারা কোনো সাহায্যের জন্যই এগিয়ে এলো না। [কুরান: ৫৯:১১]

আল্লাহর নবী পনের দিন বনি নদির গোত্রকে অবরোধ করে রাখে। তারা ক্রমান্বয়ে সম্পূর্ণরূপে অসহায় হয়ে পড়ে। আল্লাহ তাদের অন্তরে চরম ত্রাস ও আতংক পয়দা করে।

তারা নবীর কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করে এবং উঠের পিঠে বহন পরিমাণ অস্ত্রবিহীন জিনিসপত্র সঙ্গে নেয়ার অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিতাড়িত করার আকুতি জানালে নবী রাজী হন।

বনি নাদির গোত্রের লোকেরা তাদের উঠের পিঠে বহনযোগ্য পরিমাণ জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে বিতাড়িত হতে বাধ্য হয়। - কিছু লোক যায় খায়বারে এবং অন্যান্যরা যায় সিরিয়ায়।' [2][3][4][5]

মুহাম্মদ তাঁর নিজস্ব জবানবন্দীতে (কুরান) যা উল্লেখ করেছেন:

৫৯:২-৪ 
তিনিই কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে প্রথমবার একত্রিত করে তাদের বাড়ী-ঘর থেকে বহিষ্কার করেছেন। তোমরা ধারণাও করতে পারনি যে, তারা বের হবে এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদের দূর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহর কবল থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহর শাস্তি তাদের উপর এমনদিক থেকে আসল, যার কল্পনাও তারা করেনি। আল্লাহ তাদের অন্তরে ত্রাস সঞ্চার করে দিলেন।
তারা তাদের বাড়ী-ঘর নিজেদের হাতে এবং মুসলমানদের হাতে ধ্বংস করছিল। অতএব, হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিগণ, তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।
আল্লাহ যদি তাদের জন্যে নির্বাসন অবধারিত না করতেন, তবে তাদেরকে দুনিয়াতে শাস্তি দিতেন। আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আযাব।  
এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জানা উচিত যে, আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।  
৫৯:৫
তোমরা যে কিছু কিছু খর্জুর বৃক্ষ কেটে দিয়েছ এবং কতক না কেটে ছেড়ে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই আদেশ এবং যাতে তিনি অবাধ্যদেরকে লাঞ্ছিত করেন। [6]
৫৯:১১
আপনি কি মুনাফিকদেরকে দেখেন নি? তারা তাদের কিতাবধারী কাফের ভাইদেরকে বলেঃ তোমরা যদি বহিস্কৃত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদের সাথে দেশ থেকে বের হয়ে যাব এবং তোমাদের ব্যাপারে আমরা কখনও কারও কথা মানব না। আর যদি তোমরা আক্রান্ত হও, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করব। আল্লাহ তা’আলা সাক্ষ্য দেন যে, ওরা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।  
ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। - অনুবাদ, টাইটেল ও [**] যোগ - লেখক।]

Cause of Expulsion of Bani al-Nadir:

The narrative of Muhammad Ibne Ishaq and Al-Tabari:

“In this year, the fourth year of the Hijrah (625 AD), the prophet expelled the Banu Nadir from their settlements. The cause of this was:

Amr bin Umayyah, as he returned from the expedition sent out by the messenger of God to Bir Mau’nah, killed two men to whom had been given a promise of protection by the messenger of God.

The apostle went to Banu al-Nadir to ask for their help in the paying blood wit for the two men of Banu Amir whom Amr bin Umaayyah al-Damri (Muhammad’s companion) had killed after he had given them the promise of security.

There was a mutual alliance between Banu al-Nadir and Banu Amir.  When the apostle came to them and ask for the blood wit they said that of course they would contribute in the way he wished; but they took counsel with one another apart saying, ‘You will never get such a chance again. Who will go to the top of the house and drop a rock on him (so as to kill him) and rid us of him?’

The apostle was sitting by the wall of one of their houses at the time. Amr bin Jihash b. Ka’b volunteered to do this and went up to throw down a rock. 

As the apostle was with a number of his companions among whom were Abu Bakr, Umar and Ali, news came to him from heaven about what these people intended.

So, he got up (and said to his companions, ‘Don’t go away until I come to you’) and he went back to Medina.

When his companions had waited long for the prophet, they got up to search for him and met a man coming from Medina and asked him about him. He said that he had seen him entering Medina, and they went off, and when they found him he told them of the treachery which the Jews mediated against him. The apostle ordered them to prepare for war and to march against them. Then he went off with the men until he came upon them. 

The Jews took refuge in their forts and the apostle ordered that the palm trees should be cut down and burnt.

They shouted, “Muhammad, you have forbidden damage to property and have blamed those guilty of it. Why then are you cutting down and burning our palm trees?”

Now there was a number of B. Auf b. al-Khajraj among whom were Abdullah b. Ubayy b. Salul and Wadia and Malik  b. Abu Qauqal and Suwayd and Dais who had sent to B. al-Nadir saying,

‘Stand firm and protect yourselves, for we will not betray you. If you are attacked we will fight with you and if you are turned out, we will go with you.’

Accordingly they waited for help they had promised, but they did nothing and God cast terror into their hearts.

The Messenger of God besieged them for fifteen days until he had reduced them to a state of utter exhaustion.

They asked the apostle to deport them and to spare their lives on condition that they could retain all their property which they could carry on camels, except their armor (weapons), and he agreed.

So they loaded their camels which what they could carry. – Some went to Khaybar and others went to Syria’. [2][3][4][5]

>>> পাঠক, আসুন, আমরা বনি নাদির গোত্রকে বিতাড়িত করার কারণটি মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করে প্রকৃত সত্য অনুধাবনের চেষ্টা করি।

ঘটনার বিবরণে আমরা জানছি:

১) আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমর বিন উমাইয়াহ নামক তাঁর এক অনুসারীকে পাঠিয়েছিলেন বীর মাউনাহ নামক এক অভিযানে।

২) সেখানে তাঁর সেই অনুসারী বনি আমির গোত্রের দু’জন নিরপরাধ লোককে খুন করে মদিনায় ফেরত আসে।

৩) উক্ত ঘটনা নিঃসন্দেহে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারী এবং বনি আমির গোত্রের বোঝাপড়ার বিষয়। বনি নাদির গোত্রের কোনো লোক এই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না।

৪) তা সত্ত্বেও মুহাম্মদ তাঁদের কাছে গিয়েছিলেন তাঁর ও তাঁর অনুসারীর অপকর্মের মাশুল জোগাড়ের জন্যে।

৫) কোনোরূপ জড়িত না থাকা সত্ত্বেও বনি নাদির গোত্রের লোকেরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীর অপকর্মের মাশুল দিতে রাজিও ছিলেন! 

কিন্তু,

৬) বনি নাদির গোত্রের লোকেরা মুহাম্মদের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর মুহাম্মদ তাঁর সঙ্গে আগত আবু-বকর, ওমর ও আলী সহ অন্যান্য অনুসারীদের বনি নাদির গোত্রের নিকট বসিয়ে রেখে কোনো প্রকার কারণ দর্শন ছাড়াই তাঁর নিজ বাসস্থানে ফিরে আসেন।

৭) তাঁর সেই অনুসারীরা তাদের নবীর ফিরে আসার প্রতীক্ষায় অপেক্ষা করার পর যখন নবী ফিরে এলেন না, তখন তারা নবীকে খুঁজতে বের হন!

৮) তারা যখন মুহাম্মদকে খুঁজে পান, মুহাম্মদ তাদেরকে জানান যে, তিনি আসমানি ঐশী বাণীর মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, বনি নাদির গোত্রের লোকেরা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে! মুহাম্মদ তাদেরকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বনি নাদির গোত্রের ওপর হামলার আদেশ জারি করেন! এবং তিনি নিজেও সেই হামলায় অংশ নেন!

৯) মুহাম্মদেরই সাথে আগত অন্যান্য অনুসারীরা বনি নাদির গোত্রের লোকদের সাথে আরও অধিক সময় অবস্থান করে ও তাঁদের ষড়যন্ত্রের কোনো আলামত পাননি।

“তারা তা জানতে পারেন মুহাম্মদ মারফত!”

শুধু কী তাই! 

মুহাম্মদ নিজেও তাঁদের ষড়যন্ত্রের কোনো আলামত পাননি!

“তিনি তা জেনেছেন আসমানি ঐশী বাণী মারফত!”

অর্থাৎ,

১০) মুহাম্মদের দাবির সপক্ষে কোনোরূপ সাক্ষ্য-প্রমাণ (Evidence) কিংবা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ সাক্ষীর (Witness) পরিমাণ শূন্য শূন্য শূন্য ---- (absolute Zero)!

>>> এই শূন্য শূন্য শূন্য সাক্ষ্য-প্রমাণ ও সাক্ষীবিহীন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নিয়ে স্বঘোষিত আখেরি নবী মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ “আসমানি ঐশী বানীর অজুহাতে” বনি নাদির গোত্রের ওপর আগ্রাসী আক্রমণ চালান!

তিনি ও তাঁর অনুসারীরা অমানুষিক নৃশংসতায় একটি গোত্রের সমস্ত মানুষকে তাদের শত শত বছরের ভিটে-মাটি-বসত-বাড়ি থেকে প্রায় এক বস্ত্রে (উঠের পিঠে বহনযোগ্য পরিমাণ পরিধেয়/মালামাল) বিতাড়িত করে তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি লুণ্ঠন করেন!  

পাঠক, বনি কুরাইজার (পর্ব- ১২) বীভৎস ঘটনার সঙ্গে বনি নাদির গোত্রের এই ঘটনার কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছেন কি? সেখানেও মুহাম্মদ একই কায়দায় ঐশী বানীর অজুহাতে বনি কুরাইজার ৭০০-৯০০ জন সুস্থ সবল সুঠাম প্রাপ্তবয়স্ক লোককে প্রকাশ্য দিবালোকে একে একে গলা কেটে খুন করে তাঁদের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি করেছিলেন বেদখল;  দিয়েছিলেন তাঁদের যৌবনবতী মা-বোন-মেয়েদের দাসীকরণসহ যৌনসম্ভোগ এবং বয়োবৃদ্ধ/অক্ষম বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা, দাদী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের চিরদিনের জন্য দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার বৈধতা!

বনি কেইনুকা গোত্রের মত এবারও সেই একই আবদুল্লাহ বিন উবাই ও তাঁর সহকারীদের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বনি নাদির গোত্রের লোকেরা ও প্রাণভিক্ষা পেয়েছিলেন। কারণ তখনও (৬২৫ সাল) মুহাম্মদ আদি মদিনাবাসী এই আবদুল্লাহ বিন উবাইকে উপেক্ষা করার মত শক্তির অধিকারী হন নাই। মুহাম্মদ এই আবদুল্লাহ বিন উবাইকে মুনাফেক রূপে আখ্যায়িত করেছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এই "আবদুল্লাহ বিন উবাই" মুনাফিক রূপেই ইসলাম বিশ্বাসীদের মনে "আবু লাহাবের" মতই ঘৃণার পাত্র হয়ে আজও বেঁচে আছেন।

মুহাম্মদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মত সৎসাহসের অধিকারী এই অসীম সাহসী আবদুল্লাহ বিন উবাই মুহাম্মদের দুরভিসন্ধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। কিন্তু তাঁর করার কিছু ছিল না। গনিমতের মালে ধনী হওয়া এবং দাস-দাসীর মালিকানা ও দাসী ভোগের উগ্র বাসনা, মৃত্যুপারের বেহেস্তবাস ও হুরীভোগের প্রবল লালসা এবং সর্বোপরি মুহাম্মদের বশ্যতা অস্বীকারকারীদের ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর অনিবার্য আযাবের ভীতিকে উপেক্ষা করা আদৌ সহজ ছিল না! ওহী নামের মুহাম্মদী বর্ম ও বিভিন্ন কসরতের মাধ্যমে মদিনায় মুহাম্মদ ক্রমান্বয়ে নিজেকে এক প্রবল পরাক্রমশালী নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছিলেন।

এই অসীম সাহসী আবদুল্লাহ বিন উবাই বনি কেউনুকা ও বনি নাদির গোত্রের মত বনি কুরাইজা গোত্রের সেই অসহায় মানুষদের ও বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর একান্ত চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি তাঁদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কারণ, ততদিনে (৬২৭ সাল) মুহাম্মদ আরও অনেক শক্তিশালী! শক্তিমত্তায় মত্ত মুহাম্মদ সেদিন আবদুল্লাহ বিন উবাইকে অবলীলায় উপেক্ষা করে বনি কুরাইজার সেই "গণহত্যাযজ্ঞ” বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছিলেন।

>>> বনি নাদির গোত্রকে উচ্ছেদ ও বনি কুরাইজার গণহত্যা-যজ্ঞের মাধ্যমে মুহাম্মদ এত বিশাল গনিমতের অধিকারী হন যে তিনি এই লুটের মালের সাহায্যে তাঁর প্রতি আনসারদের পূর্ব-অনুগ্রহ পরিশোধ করা শুরু করেন।

ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা:
আনাস বিন মালিক হতে বর্ণিত:বনি নাদির ও বনি কুরাইজা গোত্র কে পরাভূত করার পূর্ব পর্যন্ত কিছু লোক আল্লাহর নবীকে কিছু খেজুর ও পাম (তাল জাতীয়) গাছ ইজারা স্বরূপ উপহার দিয়েছিল তারপর তিনি তাদের সেই খেজুর ও পাম (তাল জাতীয়) গাছগুলো ফেরত দেয়া শুরু করেন। (বুখারী: ৫:৫৯:৩৬৪)! [7]
[Narrated By Anas bin Malik: Some people used to allot some date palm trees to the Prophet as gift till he conquered Banu Quraiza and Bani An-Nadir, where upon he started returning their date palms to them.]

>>> যেহেতু তাঁদেরকে বিনা যুদ্ধেই বিতাড়িত করা হয়েছিল, তাই বনি নাদির গোত্রের সমস্ত সম্পত্তি মুহাম্মদ একাই (Fai Booty) হস্তগত করেন!

মুহাম্মদের ভাষায় (কুরান):

৫৯-৬-৭
আল্লাহ বনু-বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার উপর ইচ্ছা, তাঁর রসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। --- আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়।--
ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা:
উমর হতে বর্ণিত:বানি নাদির গোত্রের কাছ থেকে লুণ্ঠিত সম্পদ আল্লাহ তার নবীর কাছে ফাই (Fai Booty) রূপে স্থানান্তরিত করেছিলেন কারণ তা মুসলমানদের ঘোড়া বা উঠ নিয়ে যুদ্ধের কারণে অর্জিত হয় নাই। সেই কারণে, ঐ সম্পদের মালিক বিশেষ করে আল্লাহর নবীর, তিনি তা তার পরিবারের বাৎসরিক ভরণ-পোষণ বাবদ খরচ করেন এবং তারপর যা অবশিষ্ট থাকে তা আল্লাহর কারণে ব্যবহারের জন ঘোড়া ও যুদ্ধ-অস্ত্র খরিদ করেন। (বুখারী: ৪:৫২:১৫৩)[8][9]
[Narated By 'Umar : The properties of Bani An-Nadir which Allah had transferred to His Apostle as Fai Booty were not gained by the Muslims with their horses and camels. The properties therefore, belonged especially to Allah's Apostle who used to give his family their yearly expenditure and spend what remained thereof on arms and horses to be used in Allah's Cause.]

>>> এই লুটের মালের উত্তরাধিকার (গণিমত) ইসলামসম্মত ১০০% হালাল উপার্জন!

কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা পরিস্থিতিতে ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য জানা ও উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো নিজেকে সেই নির্দিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অবস্থানে বসিয়ে নিরপেক্ষভাবে সেই নির্দিষ্ট পরিস্থিতি অনুধাবন করা। নীতিশাস্ত্রে এই পন্থাটিকে "Golden Rule" নামে আখ্যায়িত করা হয়। জানা যায়, এই পন্থাটি মুহাম্মদের জন্মের প্রায় এক হাজার এক শত বছর পূর্বে (৫৫১-৪৭৯ খ্রিষ্ট-পূর্ব) চীনের দার্শনিক কনফুসিয়াসের মতবাদে ("ethical-sociopolitical teaching") প্রথম শেখান হয়।

পন্থাটি হলো:

১) অন্য লোকের কাছে একজন নিজে যে রূপ ব্যবহার প্রত্যাশা করে, তার উচিত অন্য লোকের সাথে সেই রূপ ব্যবহার করা (One should treat others as one would like others to treat oneself)।

২) অন্য লোকের সাথে সেই রূপ ব্যবহার করা উচিত নয় যে রূপ ব্যবহার কেউ তার নিজের জন্য প্রত্যাশা করে না (One should not treat others in ways that one would not like to be treated)। [10]

যে সমস্ত ইসলাম অনুসারী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা শতাব্দীর পর শতাব্দী "ঐশী বানীর অজুহাতে" মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বানু নাদির গোত্রের সমস্ত লোককে তাঁদের শত শত বছরের পৈতৃক আবাস-স্থল থেকে প্রায় এক-বস্ত্রে বিতাড়িত করে তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি লুণ্ঠন ও বানু কুরাইজা গোত্রের সকল সুস্থ-সবল-সুঠাম প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে গলা কেটে খুন ও অন্যদের দাস-দাসীতে রূপান্তরিত করে তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি লুণ্ঠন করার সপক্ষে নির্লজ্জ গলাবাজি করে চলেছেন, তাদের ও তাদের পরিবারকেও যদি অন্য কোনো তথাকথিত কামেল-পীর-ফকির-গুরু-বাবাজী ও তার চেলা-চামুন্ডেরা "একইরূপ অজুহাতে একইভাবে বিতাড়িত/খুন ও দাস-দাসীতে রূপান্তর করে ভাগাভাগি” করে নেন, তাহলেই, বোধ করি, তাঁরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারবেন।

কিন্তু,

একজন সৎ, চিন্তাশীল, বিবেকবান সুস্থ সাধারণ মানের মানুষও কখনোই কোনো মানুষের জন্য এরূপ পরিস্থিতি কল্পনাও করতে পারেন না।

হ্যাঁ! মুহাম্মদ কোনো সাধারণ কামেল-পীর-ফকির-গুরু-বাবাজী নন। কেন তিনি অসাধারণ, তার আলোচনা পর্ব-১৪ তে করা হয়েছে!

গত ১৪০০ বছর যাবত নিবেদিতপ্রাণ ইসলামী পণ্ডিত ও ইসলাম-বিশ্বাসীরা (জেনে বা না জেনে) বিভিন্ন কসরতের মাধ্যমে মুহাম্মদের এহেন অপকর্মের বৈধতা দিয়ে এসেছেন! বাধ্য হয়েই তাদেরকে তা করতে হয়েছে অতীতে, করতে হচ্ছে বর্তমানে এবং যতদিন ইসলাম বেঁচে থাকবে, ইসলাম অনুসারীদের তা করতে হবে। এ থেকে তাদের কোনই পরিত্রাণ নেই! কেন নেই, তার আলোচনা দশম পর্বে (জ্ঞান তত্ব) করা হয়েছে।

(চলবে)

[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে। 

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

 [1] নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষমতাধর নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন
Sahih Bukhari: volume 4, Book 52, Number 220

Narated By Abu Huraira: Allah's Apostle said, "I have been sent with the shortest expressions bearing the widest meanings, and I have been made victorious with terror (cast in the hearts of the enemy), -----

[2] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫ - পৃষ্ঠা ৪৩৭-৪৩৯

[3] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক:  আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭ – পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪৪৮-১৪৫৪


[4] “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ),
এড মারসেডেন জোনস, লন্ডন ১৯৬৬ - পৃষ্ঠা ৩৬৩-৩৬৮

[5] কিতাব আল-তাবাকাত আল-কাবির – লেখক: মুহাম্মদ ইবনে সা'দ  (৭৮৪-৮৪৫ খৃষ্টাব্দ)', অনুবাদ এস মইনুল হক, প্রকাশক কিতাব ভবন, নয়া দিল্লি, সাল ২০০৯ (3rd Reprint),
ISBN 81-7151-127-9(set), ভলুউম ২, পার্ট- ১, পৃষ্ঠা ৬৮-৭১

[6] “তোমরা যে কিছু কিছু খর্জুর বৃক্ষ কেটে দিয়েছ এবং কতক না কেটে ছেড়ে দিয়েছ,”
ইমাম বুখারী (সহি বুখারী):

Volume 5, Book 59, Number 365
Narrated By Ibn Umar: Allah's Apostle had the date-palm trees of Bani Al-Nadir burnt and cut down at a place called Al-Buwaira. Allah then revealed: "What you cut down of the date-palm trees (of the enemy) Or you left them standing on their stems. It was by Allah's Permission." (59.5)

[7] “এই লুটের মালের সাহায্যে মুহাম্মদ আনসারদের পূর্ব-অনুগ্রহ পরিশোধ করা শুরু করেন”:
Sahih Bukhari volume 5, Book 59, number 364:

[8] “বনি নাদির গোত্রের সমস্ত সম্পত্তি মুহাম্মদ একাই হস্তগত করেন (Fai booty)”
Sahih Bukhari volume 4, Book 52, number 153Print

[9] Fai (i.e. booty gained without fighting) – For Muhammad ONLY
(Fatima claimed her inheritance – Fadak)
Sahi Bukhari: Volume 5, Book 59, Number 546:
Sahi Bukhari: Volume 5, Book 59, Number 367: -long Hadit
    
[10] Golden Rule


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন