আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

মডারেশনের ভালো যে-দিক

লিখেছেন আসিফ আল আজাদ

আরব ভূখণ্ড, আশেপাশের অঞ্চল, আরবি ভাষাভাষী ও অনান্য দেশের আরবি জানা মুসলিমদের থেকে আমাদের দেশীয় সাধারণ মুসলিমরা অনেক উন্নত মানসিকতার, অনেক বেশি মডারেট, অনেক বেশি আধুনিক ও অনেক বেশি মানবিক।

এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা প্রধান কারণ - আরবি না জানা, জানতে না চাওয়ার প্রবণতা। এর কৃতিত্ব অনেকটাই দিতে হবে সেইসব ওলি-আউলিয়াদেরই, যারা (মুলত পারস্য থেকে) এই উপমহাদেশে ইসলামকে এনেছিল। তাদের প্রচারিত ইসলাম আর আরবের মূল ইসলামের মধ্যে ছিল (এবং এখনও আছে) আকাশ-পাতাল ব্যবধান। এই উপমহাদেশের জনগণ আরবি জেনে, কুরান-হাদিস পড়ে বা ইসলামি কিছু জেনে মুসলিম হয়নি (এবং এখনও জানতে চায় না); এরা মুসলিম হয়েছে ঐসব ওলি-আওলিয়াদের ব্যক্তিত্ব দেখে, কর্মকাণ্ড দেখে। এছাড়া আরো অনেক কারণ আছে। যেমন, একটা উদাহরন দেওয়া যায়: তাদের ইসলামে গান-বাজনা হারাম ছিল না, বরং হিন্দু ও স্থানীয় ধার্মিকদের আকর্ষণ করতে তাদের প্রার্থনার রীতি অনুযায়ী গান-বাজনা ছিল, যা এখনও শুধুমাত্র এই উপমহাদেশের বিভিন্ন মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যেই কেবল দেখা যায়।

ইসলামের জন্ম থেকে প্রসারের ইতিহাস যুদ্ধে ভরা, জিহাদে ভরা (খ্রিষ্টানদেরও তাই, বরং আরো বেশি); কিন্তু এই উপমহাদেশে ইসলাম কিন্তু যুদ্ধের মাধ্যমে প্রচার প্রসার হয়নি, হয়েছে সম্পূর্ণ অন্যভাবে, যা অনেকেই জানেন, এ বিষয়ে নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। তারা ইসলামকে তাদের মত করে এই উপমহাদেশে না আনলে হয়তো স্বাভাবিকভাবেই অর্থাৎ জিহাদের মাধ্যমে বা ঐ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই এখানে ইসলাম আসতো, অথবা আমরা এখানকার আদি ধর্মগুলো নিয়েই থাকতাম বা খ্রিষ্টান আগ্রাসনের কারণে খ্রিষ্টান হয়ে যেতাম।

এখানে ওলি-আউলিয়াদের ইসলাম আসার পর খুব বেশিদিন হয়নি, এখন আরবি ভাষা মাদ্রাসায় ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। তারপরেও এটা শুধুমাত্র মাদ্রাসাগুলোতেই। মাদ্রাসার আরবি জানা ছাত্রদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার আর কতইবা! জামাত-শিবিরের উত্থানও খুব বেশি আগের কথা নয়।

এখন জরিপ করলে দেখা যাবে, এ দেশে যত জঙ্গি তৈরি হয় এবং জঙ্গি কর্মকাণ্ডকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে, তার ৯৮% ই মাদ্রাসা থেকে তৈরি অথবা জামাত-শিবিরের। কোনো জঙ্গী হামলা, মানুষ মরলে, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটলে সাধারণ জনগণ অর্থাৎ সাধারণ মুসলিমদের প্রায় সবাইই সমস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন, "ইহা সহি ইসলাম নয়।"

গুড। আসলেই, ইহা ওলি-আউলিয়াদের সহি ইসলাম নয়, যে-ইসলামকে দেখে আমাদের পূর্বপুরুষ ইসলাম গ্রহণ করেছিল এবং আমাদের ইসলাম সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়েছিল। এই মডারেশন বা পরিবর্তিত চিন্তাধারা নিঃসন্দেহে ভাল। ওলি-আউলিয়াদের ইসলামে সামান্য যেটুকু আপত্তিকর বিষয়গুলো ছিল, যেমন মোঘল আমলে জুম্মার নামাজের পর মোনাজাতে শত্রুর বিরুদ্ধে অভিশাপ দেওয়া হত, এই বিষয়গুলো এখন অনেকটাই কম। শিক্ষার কারণে এবং আরো অনেক কারনেই মানুষের মানবিকতা আগের থেকে উন্নত হচ্ছে।

একটু লক্ষ্য করলে খুব ভাল করে বোঝা যাবে যে, বর্তমানে ছোট্ট একটা গোষ্ঠীই মূল ইসলামের পথে এগোচ্ছে। মাদ্রাসায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরবি জেনে, বুঝে, শিখে, কোরান-হাদিস শিক্ষা করেই তারা সঠিক ইসলামের দিকে এগোচ্ছে। আর আরবি ও মূল ইসলাম না জেনে না বুঝে মডারেট মুসলিমরা তাদের বিরোধিতা করছে। বলছে, "ইহা সহি ইসলাম নয়।"

একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, ইসলামের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন মনীষী/বিজ্ঞানীর জন্ম হয়েছে যাদের প্রায় সবাই ইরানের এবং ৭৫০ থেকে ১১০০ সালের মধ্যে। তার মধ্যে ইবনে সিনা ও আল রাজি প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছিল। অন্যদের অবস্থাও খুব একটা ভাল ছিল না। সর্বশেষ ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী আবদুস সালামকে অমুসলিম ঘোষণা করে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তানের সরকার। মক্কা-মদীনায় কোনো বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক তৈরি হয়নি, আর হবে বলেও কোনো সম্ভাবনা নেই। ইসলাম আর জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী দুটি ধারা। খ্রিষ্টান সমাজে যে সমস্যা সব থেকে ভয়াবহ ছিল, তারা তা থেকে অনেকটাই বেরিয়ে গেছে বলতে হয়, আর সেখানে ইসলাম বারবার মোড় নিচ্ছে পেছনের দিকে। বর্তমানে মডারেশন যেটুকু আছে (অনেকটাই আছে) সেটাই একমাত্র ভরসা। এইটুকু না থাকলে হয়তো মুসলিমদের একেবারে আদিম অবস্থাতেই থাকতে হত। সবাইই হতো জঙ্গি বা জঙ্গিদের সমর্থক।

জয় মডারেশনের জয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন