আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড: ফরজ যে-কাজটি ক্কাযা হয়ে ছিলো

শান্তির ধর্মের আসমানী কিতাব কোরান থেকে কয়েকটি শান্তিকামী আয়াত:
আর তাদেরকে হত্যা কর যেখানে পাও সেখানেই
(২:১৯১)
খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবো
(৩:১৫১)
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
(৫:৩৩)
যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।
(৯:১৪)
তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম।
(৯:২৯)
হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ (ইংরেজি অনুবাদে - strive hard) করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন।
(৯:৭৩)
হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
(৯:১২৩)
আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়। (৮:১২)
এবার দেখা যাক, কয়েকটি হাদিসে ইছলামের নবী কী বলেছে:
আমি সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছি। (বুখারি ৫২:২২০)
তরবারির ছায়ার নিচে বেহেশত।
(বুখারি ৫২:৭৩)
অবিশ্বাসীকে হত্যা করা আমাদের জন্য একেবারেই ছোট্ট একটি ব্যাপার।
(তাবারি ৯:৬৯)
এ ছাড়া, আল্যা-রসুলকে স্বীকার না করা পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেয়া আছে বুখারী ৮:৩৮৭-এ ও মুসলিম ১:৩৩-এ।

ইবন ইসহাক/হিশাম ৯৯২-এ পাওয়া যাচ্ছে নবীজির নির্দেশনা:
যারা আল্লাহকে অবিশ্বাস করে, তাদেরকে হত্যা করো।
আসুন, এখন ইছলামের ইতিহাস থেকে জেনে নেয়া যাক কয়েকটি ঘটনা:
১. নবী ও তার অনুসারীদের আগ্রাসী নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মৌখিক প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেছিলেন বলে ১২০ বছর বয়সী অতি বৃদ্ধ ইহুদী কবি আবু আফাককে নবীর আদেশে হত্যা করে তার অনুসারীরা।
২. আবু আফাক-কে হত্যার পর আসমা-বিনতে মারওয়ান তাঁর বিদ্বেষ প্রকাশ করলে নবীর নির্দেশে রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত নিরস্ত্র এই জননীকে নৃশংসভাবে খুন করে নবীজির এক চ্যালা। ঘাতক যখন এই জননীকে খুন করে, তখন এই হতভাগা মা তাঁর এক সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর প্রত্যুষে খুনী তার প্রিয় নবী মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহর সাথে একত্রে সকালের নামাজ (ফজর) আদায় করে।
৩. কাব বিন আল-আশরাফ নামের এক ব্যক্তি আল্লাহর নবীর কাজের নিন্দা করা শুরু করেন ও বদর যুদ্ধে যাদেরকে খুন করার পর লাশগুলো গর্তে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন কবিতা আবৃতির মাধ্যমে। তাঁকেও নির্দয়ভাবে খুন করে নবীর উম্মতেরা
-----------

অতএব বাংলাস্তান হেফাজতী একাডেমী কর্তৃক আয়োজিত কিতাব মাহফিলের বাইরে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করে একাধারে ফরজ ও সুন্নত কি পালন করা হয়নি? নিশ্চয়ই হয়েছে। সত্যিকারের মুছলিমরা তা অবলীলায় স্বীকার করে নিয়েছে।

আর একদল মোmean-minded ও মডারেট মুছলিম মনে মনে তা স্বীকার করলেও মুখে বলেছে, বলছে ও বলবে ভিন্ন কথা:
ইহা ছহীহ ইছলাম নহে। অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওপরের কোনও আয়াত, হাদিস, বাণী বা ঘটনার কোনও সম্পৃক্ততা নেই। এবং হত্যাকারীরাও এসবের দ্বারা কোনওভাবেই প্রভাবিত বা অনুপ্রাণিত নহে।
ইছলামী ইতরামিগুলোকে ভিন্ন মোড়কে উপস্থাপন করে ইছলামের পিঠ বাঁচানোর ইজারা নেয়া একদল বিপ্লববাজ অবশ্য পরের কথাগুলো বলতে ব্যগ্র হয়ে আছে; এখনও বলেনি, তবে সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই বলতো বা বলবে:
এই হত্যাকাণ্ড বস্তুত ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত। এটা মূলত সাম্রাজ্যবাদী কর্পোরেট বেনিয়াদের ষড়যন্ত্র, পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার অনিবার্য ফল, ঔপনিবেশিকতার জের, সামাজিক বৈষম্য ও শ্রেণী সংগ্রামের হ্যানোত্যানো...
লক্ষ্য করা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অনলাইনে কটু মন্তব্য করলে দক্ষ ও তৎপর গোয়েন্দা বাহিনী তাকে ধরে ফেলে পরদিনই, কিন্তু ইছলামীরা নিজেদের খোমা মোবারক প্রদর্শন করে বছরের পর বছর প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েও থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ধর্মবাজদের ঘাঁটানোর সাহস আসলে নেই কোনও প্রশাসনেরই। বরং প্রশাসন এদেরই আজ্ঞাবহ।

আমরা কি এই হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার চাইবো? চেয়ে কী লাভ! মুছলিমদের ধর্মানুভূতিতে আঘাতকারীকে হত্যা করেছে যে ইছলামী বীরেরা, তাদের সঠিক বিচার হবে মদিনা সনদের দেশে? 

হুমায়ুন আজাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি দশ বছরেও! থাবা বাবা হত্যাকাণ্ডের বিচারের নামে চলছে নানান টালবাহানা। আর অভিজিৎ রায়? এই হত্যার বিচারের ভবিষ্যৎ হবে আরও শোচনীয়। কারণ ইছলাম-সমালোচনার অপরাধ ছাড়াও তাঁর বিপক্ষে যায় আরও একটি ভয়াবহ তথ্য - তিনি জন্মগতভাবে বহন করতেন হিন্দু-পদবী।

আর সম্ভাব্য বিচার বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা এই যে, নবীর নির্দেশ, ফরজ ও সুন্নত পালনকারী ইছলামী জিহাদিদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে বিচারকরা নিজেদের পারলৌকিক ইন্দ্রিয়পরায়ণ জীবনযাপনের সম্ভাবনাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলার মতো নির্বোধ নিশ্চয়ই নন। হুরসঙ্গমসপ্ন তো তাঁদেরও আছে!

-----------

'মুক্তমনা' ব্লগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনলাইনে বাংলায় মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রকৃত পথিকৃৎ ছিলেন আপাদমস্তক মানবতাবাদী, যুক্তিমনস্ক ও অত্যন্ত সুলেখক অভিজিৎ রায়। তাঁর কর্মকাণ্ড থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, তাঁর লেখা বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী অসাধারণ সব রচনা ও বই পড়ে, তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করেই আজ অনলাইনে বাংলায় মুক্তচিন্তার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছে যুক্তিপথের পথিকেরা। তবে শুরুটা কিন্তু তিনিই করেছিলেন। 

তাঁর এই অপমৃত্যুতে আমরা শোকাহত, স্তম্ভিত, তবে বিচলিত নই। আমরা আরও বেগবান হবো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন