লিখেছেন অপ্রিয় কথা
মাননীয় রাষ্ট্রচালক,
হ্যাঁ, আমি নাস্তিক! আমি প্রকাশ্যে এই অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই! আমি পাসপোর্ট বা যে কোনো ফরমে লিখতে চাই - আমি নাস্তিক। ধর্মের অপশনে কোনো ধার্মিক যদি হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ খ্রিষ্টান লিখতে পারে, তবে আমি কেন পারবো না নাস্তিক লিখতে? আমার অপশন কই?
সকল ধার্মিক যদি প্রকাশ্যে অদৃশ্য ও অপ্রমাণিত আল্লাহ-ঈশ্বর-গড-ভগবানের জিকির করতে পারে, তবে আমি কেন প্রকাশ্যে বলতে পারবো না আল্লাহ-ঈশ্বর-গড-ভগবান বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই? এবং সব মানুষের সৃষ্টি? কেন বলতে পারবো না, আমি অবিশ্বাসী?
আমি নাস্তিক। কিন্তু কারো গায়ে হাত তোলা, কাউকে হত্যা করা, নিজের মত কারো উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া, ভিন্নধর্মীদের নিন্দা করা, নাক ফুলিয়ে ভ্রু কুঁচকে মানুষকে ঘৃণা করা - এসব শিক্ষা আমার মাঝে নেই। আমি নিজেকে সেই শিক্ষায় গড়িনি।
আমি নাস্তিক। আমি মানবিক অবক্ষয়ের বিরূদ্ধে! কোনো মুসলমান নির্যাতিত হলে আমি ব্যথিত হই, হিন্দু অত্যাচারিত হলে একই ব্যথা অনুভব করি। ফিলিস্তিনীর মুসলিমের ওপর ইসরাইল আঘাত হানলে আমি তার প্রতিবাদ করি! আইএস-এর মুসলিমরা ধরে ধরে খ্রিষ্টান জবাই করলে আমি তারও প্রতিবাদ করি। বাংলাদেশে মুসলিমরা সংখ্যালঘু নির্যাতন, তাদের মন্দির, বাড়িঘর ভেঙে দিলে আমি তারো প্রতিবাদ করি! হিন্দুরা বাবরি মসজিদ ভাঙলে আমি তার নিন্দা জানাই! বাঙালীরা পাহাড়ীদের নির্যাতন-ধর্ষণ করলে আমি বিষন্ন হই, প্রতিবাদ করি!
আমি নাস্তিক। আমি কারো অধিকার হরণ চাই না। কেউ নামাজ পড়ুক, প্রার্থনা করুক, প্রণাম করুক, গির্জায় যাক, চার্চে যাক, আমি তাদের আটকাই না। আমি চাই, তাদেরও অধিকার থাকুক, চাই তারাও নির্বিঘ্নে তাদের ধর্ম পালন করুক। তাতে আমার আপত্তি নেই।
কিন্তু আমার কেন অধিকার থাকবে না এদেশে নাস্তিক পরিচয়ে বাঁচার? মানুষ পরিচয়ে বাঁচার? কেন আমাকে পাসপোর্টে লিখতে হবে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান? আমি তো কোনো প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসী নই।
মাননীয় রাষ্ট্রপ্রধান, আমি নাস্তিক পরিচয়ে বাঁচতে চাই, মানুষ পরিচয়ে বাঁচতে চাই, ধর্মের পরিচয়ে নয়। তার জন্য কী আইন পাশ করতে হবে, করুন। কী সিস্টেম পাল্টাতে হবে, পাল্টান। কিন্তু আমি আমার অধিকার চাইই চাই!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন