লিখেছেন সুহৃদ
নাস্তিক নানাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি কীভাবে এ পথে এলেন। নানা শোনালেন এক করুণ কাহিনী:
আমি আগের জন্মে শীতপীড়িত এক দেশে বাস করতাম আর ছিলাম সর্বধর্মবাদী, মানে সব ধর্মে বিশ্বাস করতাম। মৃত্যুর পর দেখি, সকল ঈশ্বর আমার সামনে উপস্থিত। ভগবান, জিহোভা, গড, অহুরা-মাজদা, আল্লা আরো আরো অনেকেই। সবাই শুরু করলেন বিশৃঙ্খলা আর মারামারি। এজন্যই শিরকের গুনাহ খুব বড় গুনাহ, ঈশ্বর জাতিটা বড্ড হিংসুটে। ভগবানের দেখলাম দাঁত সবগুলো পড়ে বুড়ো থুত্থুড়ে। জিহোভার দাড়ি পেকে অবস্থা কাহিল, এর মধ্যে রাগে মুখ বিকৃত করে ফোঁসফোঁস করছেন। ঝগড়া-বিবাদে আল্লাকে একটু সুবিধাজনক অবস্থায় দেখলাম, বেচারা মধ্য বয়সী। এখনো জোর আছে শরীরে। আমি তার কাছে চলে গেলাম। আল্লাহ বললেন, হে পূণ্যবান, তোমার জন্য আছে সুবিস্তৃত জান্নাত।
আমি জানতে চাইলাম, সেখানে কী কী আছে?
- সুশীতল পানীয়, ঝর্ণাধারা, দুধের নহর, মধু, পবিত্র মদ, যা খেয়ে তুমি মাতাল হবে না।
আমি সুশীতল শুনেই চমকে উঠলাম, শীতের দেশের মানুষ তো। জিজ্ঞেস করলাম, উষ্ণ কিছু কি নেই?
- তিনি বললেন, আছে, বাহাত্তরটি হুর!
আমি আবারো চমকে উঠলাম। এতগুলো হুর দিয়ে কী করুম। একটাই তো যথেষ্ট। আর মদ খেয়ে মাতাল না হলে এটি খেয়ে লাভ কী? আমি দিব্যচোখে একটি পুতিগন্ধময় বেশ্যালয়-শুঁড়িখানা দেখতে পেলাম, যাকে পৃথিবীতে থাকতে বলতাম - বোকার স্বর্গ। জিজ্ঞেস করলাম, হিটার আছে?
- নেই।
- লাইব্রেরি আছে?
- নেই, আমি নিজেই তো নিরক্ষর। তবে তুমি চাইলে বানিয়ে দেয়া যাবে!
- চা-কফির ব্যবস্থা আছে?
- নেই।
- আমার সঙ্গিনীকে কি দেয়া যাবে?
- না, সে এর মাঝেই দোজখে গেছে। চাইলে এর ডামি বানিয়ে দেয়া যাবে। তুমি কী চাও, তাড়াতাড়ি বল। একদল পাপিষ্ঠ বান্দা এসেছে, এদেরকেও একই দোজখে পাঠাব। সেখানে চিরকাল একসাথে আগুনে জ্বলবে ওরা। তাদের খাওয়ানো হবে পুঁজ, কাঁটাময় বৃক্ষ যক্কুম। বন্দোবস্ত করতে হবে এর।
- কেন?
- আমার ইবাদত করেনি, বিশ্বাস করেনি।
- আপনার ইবাদত না করলে, আপনাকে বিশ্বাস না করলে দোজখে পাঠাবেন। আপনার মত নৃশংস-ইডিয়টের দেয়া জান্নাতে যাওয়াটা হবে আহাম্মকি!
আল্লা রেগে গেলেন। বললেন, তাড়াতাড়ি বল, কী চাও।
আমি ক্ষেপে গিয়ে বললাম, আপনার পশ্চাৎদেশে বাঁশ দিতে চাই।
নানা এটুকু বলে থেমে গেলেন। জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কী হল?
নানা ধীরে ধীরে আয়েশ করে বললেন, এরপর আর কী, আমাকে নাস্তিক করে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হল!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন