লিখেছেন শান্তনু আদিব
সাচ্চা মুসলমান নারী হলে উত্তর দিন, এড়িয়ে যাবেন না।
ধরুন, আপনি একজন নারী, একজন গৃহিণী, একজন মা, একজন স্ত্রী।
আপনার স্বামী পরিবারের অধিকর্তা। তিনি পরিবার চালান ১০০% ইসলাম মেনে।
আপনার স্বামী একজন বিশিষ্ট ইসলামবিশারদ। লোকে তাকে সম্মান করে আলেম ব্যক্তি হিসেবে।
৫ ওয়াক্ত নামায, রোজা, হজ্জ, যাকাত কিছুই বাদ দেন না আপনারা।
ফেরেশতাদের অভিশাপের ভয়ে কখনো আপনার স্বামীকে বিছানায় না বলেন না আপনি।
চুলায় রুটি ভাজার সময়েও ডাক দিলে আপনি দৌড়ে স্বামীর বিছানায় চলে যান।
ঘরে আছে ৫ বছরের ফুটফুটে একটি মেয়ে।
একদিন কোনো এক কাজে আপনি অন্য কোথাও গেলেন, এসে দেখলেন -
আপনার ৫ বছরের মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। সারা শরীরে মারের দাগ। জামা-কাপড় ছেঁড়া।
আপনি দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন।
হাসপাতালের ডাক্তার বলল, আপনার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে, সাথে দেয়া হয়েছে বেদম মার।
যেহেতু ঘরে তখন আপনার স্বামী ছাড়া কেউ ছিল না, আপনি বুঝলেন, কে করেছে এই পাশবিক নির্যাতন।
এক পর্যায়ে মেয়েটি আপনার মারা গেল।
শরীয়া আদালতে আপনি আপনার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন।
আপনার স্বামী গ্রেফতার হলেন, মামলা কোর্টে উঠল।
আত্মপক্ষ সমর্থনে আপনার স্বামী বললেন, তিনি ধারণা করছিলেন, আপনার ৫ বছরের মেয়েটি কুমারী না। তাই তিনি বেত এবং ইলেকট্রিকের মোটা তার দিয়ে আপনার মেয়ের কুমারিত্ব পরীক্ষা করেছিলেন।
মেয়েটি কুমারী না হওয়ায় তাই পিতা হিসাবে তিনি শাস্তি দিয়েছেন।
মেডিকেল রিপোর্ট বলছে, আপনার মেয়ে ধর্ষণ এবং প্রহারের কারণে মারা যায়।
প্রাথমিকভাবে হাকিম ৮ বছরের জেল এবং ৬০০ দোররার আদেশ দিলেও মামলাটি আরও বিচার-বিশ্লেষণ করে হাকিম হুকুম করল, যেহেতু আপনার মেয়ে কুমারী ছিল না, সেক্ষেত্রে আপনার স্বামী পিতা হিসাবে তাকে শাস্তি দেবার অধিকার রাখে। আর মামলা চলাকালীন তাঁকে যথেষ্ট লম্বা সময় জেলে থাকতে হয়েছে, তাই এখন তিনি যদি ব্লাড মানি দিয়ে দেন, তাহলেই হবে আপনার স্বামীর উপযুক্ত বিচার এবং তিনি খালাস পেয়ে যাবেন।
সাধারণভাবে ব্লাড মানি যতো ধরা হয়, তার অর্ধেক ধরল কোর্ট, কারণ আপনার সন্তানটি ছিল কন্যা।
এখন একজন সাচ্চা মুসলমান নারী হিসাবে বলুন, আপনি কি মেনে নিতে পারবেন আল্লার আইনে চলা শরিয়া কোর্টের এই বিচার? নিতে পারবেন সেই ব্লাড মানি?
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই খবরের সঙ্গে ওপরের ঘটনার কোনও যোগসূত্র নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন