লিখেছেন আল্লাচালাইনা
বৌদ্ধধর্মের প্রতি সবারই রয়েছে একটা উষ্ণ-নরম, কসুম-গরম সহানুভূতি; কেননা এই ধর্মটা রক্ত-টক্ত তেমন একটা ঝরানোর সুযোগ পায়নি মানুষের, উপরন্তু ‘হগলে বনে যাওগা, গিয়া তপস্যা করো’ মার্কা বাস্তবতা বিবর্জিত সেক্সি-সেক্সি কথাবার্তা বলে আমাদের দুধ-মাখনের ওয়্যাকি নিউএইজ আধ্যাত্মবাদী বিরিঞ্চিবাবাদের অনুৎপাদনশীল ফ্যান্টাসির অন্তর্বাস রেখেছে সর্বদাই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে!
আমি ব্যাপারটাকে অন্যভাবে দেখি। আমি মনে করি ধর্ম এমন একটি সিস্টেম, যেটির সবচেয়ে স্টেইবল স্টেইট হচ্ছে - লংরানে সমাজে সবচেয়ে বেশী অশান্তি উৎপাদন করতে সক্ষম থাকাটা, প্রত্যেকটি ধর্মই। খ্রিষ্টধর্মের অশান্তি উৎপাদন করার ক্ষমতাটা নিউট্রালাইজ করে রাখা হয়েছে সক্রিয়ভাবে শক্তি প্রয়োগ করে; এই ধর্মের ডেমোগ্রাফির ভেতর পরে যেইসব মানুষ, তাদের তুলনামুলকভাবে বেশী শিক্ষিত হওয়া, অর্থনৈতিকভাবে বেশী স্বচ্ছল হওয়া, একটি উন্নত কালচার এবং মূল্যবোধ সমুন্নতকারী হওয়ার মধ্য দিয়ে। মুসলমানরা উৎপাত করে পৃথিবী অতিষ্ঠ করে রাখছে, একসময় এদেরও হয়তো শক্তি হবে শিক্ষিত হবার এবং সভ্য হবার; তখন হয়তো ইসলামের উৎপাতও আর গা করার মতো কোন হুমকি হিসেবে গণ্য হবেনা।
বৌদ্ধধর্ম কিন্তু এইসব কোর্স অফ ইভেন্টসের ভেতর দিয়ে যাবার সুযোগই পায়নি কোনো। চুল গজানোর পূর্বেই এই ধর্মটির হেয়ার ফলিকল কোষসমেত চামড়ার সম্পূর্ণ উপরিভাগটিই উৎপাটন করে নিয়েছে হিন্দুধর্ম। বিষফোঁড়া হয়ে ওঠার পুর্বে প্রত্যেকটি ধর্মই থাকে এসিম্পটোটিক; এইসময় তারা শান্তির বাণী প্রচার করে, একগালে চড় খেয়ে অপর গাল বাড়িয়ে দেয় পরম বিনম্রতায়। দীর্ঘ সময় পরে এই এসিম্পটোটিক অবস্থার অবসান ঘটিয়ে ধর্ম বিষফোঁড়া হয়ে ওঠে, যখন কোনো না কোনোভাবে একটা রাজা কিনা সেই ধর্মে দীক্ষিত হয়; রাজা দীক্ষিত হয়ে মন্ত্রীকে দেয় কষে প্যাঁদানী ‘তুই-ও এই ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছিস না কেন’ বলে; মন্ত্রীও অতপর সেই ধর্মে দীক্ষিত হয়ে আমাত্যদেরকে দেয় প্যাঁদানী একই কথা বলে; আমাত্য প্যাঁদায় তাদের সাবজেক্টদেরকে; এইভাবে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রটাই শরীয়াভিত্তিক ইছলামী রাষ্টে পরিণত হয় এক সময়। অতপর রাষ্ট্র দেয় তার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রকে প্যাঁদানী, বলে ‘এইবার তোরাও এই ধর্মের ছায়ায় আয়’, ধর্ম ছড়িয়ে পড়ে।
হাওএভার, প্যাঁদানোর এই হায়ারার্কিকাল চেইন যদি কোনো না কোনো পর্যায়ে ব্যর্থ হয়, তবে হয় ধর্মটিকে এক পা বা কয়েক পা পিছিয়ে গিয়ে নতুন করে শুরু করতে হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয়তো আপাদমস্তক বিলুপ্তই হয়ে যেতে হয়! বৌদ্ধধর্মের ক্ষেত্রে তাদের প্যাঁদানীর চেইন খুবই খুবই প্রাথমিক অবস্থায় ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু সৌভাগ্যবশত বিলুপ্ত হয়ে যেতে হয়নি ধর্মটিকে, বরঞ্চ নন-ভাইরুলেন্ট একটি অবস্থায় এটি টিকে গিয়েছে কালের যাত্রায়। তবে ভাইরুলেন্ট হয়ে ওঠার যথেষ্ট মালমসলাই যে এতে ছিলো, তার প্রমাণ কিছু আছে। এই যেমন, গল্প ফেঁদে মেয়ে মানুষকে দুই টুকরা করে ফেলার কাহিনী আছে এতে; বাস্তবে ক্ষমতা লাভ করলে যে কয় টুকরা করতো, সেটার সম্পর্কে কিছু অনুমান আমরা করতে পারি।
গৌতম বুদ্ধ বলে নানাবিধ টেনশন থেকে রক্ষার একটি ইফেক্টিভ উপায় হিসেবে বৌ-বাচ্চা পরিত্যাগপুর্বক চোরের মতো একরাতে রাজপ্রাসাদ থেকে বের হয়ে অনুদ্দেশ্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। প্রথম কথা হচ্ছে, ছেলেটা মস্তবড় একটা কাওয়ার্ড, সে রাজার ছেলে বলে ব্যতিক্রম কিন্তু একটা অস্বচ্ছল ঘরের কোন ছেলে এভাবে বৌ-সংসার ত্যাগ করলে পরে অনেকগুলো জীবনের উপর সে অবর্ণনীয় অশান্তিই নামিয়ে নিয়ে আসবে; কিন্তু সেইটা সমস্যা না। সমস্যা শুরু হয় যখন কিনা সে কোন শ্যাওড়া তলায় ধ্যানে বসলে পরে তাকে গাছে বসবাসরত পেত্নী এসে ধরে। পেত্নীর আছড়ে পড়ে যেই হোকাস-পোকাস গল্পগুলো তিনি ফেঁদেছিলেন, হযরত মুহাম্মদের নিম্নমানের হাস্যকর গাঁজাখুরী মেরাজের গল্পের সাথে কি সেটার কোন পার্থক্য আছে? আধ্যাত্মবাদরে কইষা গদাম, ফিজিকাল এভিডেন্সবিহীন দাবীকে বাস্তব বলে প্রতিষ্ঠা করার জন্য শ্রম ব্যয় করে এমন প্রত্যেকটি মতাদর্শকেই কইষা গদাম। গৌতম বুদ্ধের প্রতি আমি একফোঁটাও শ্রদ্ধাশীল নই, যেমন আমি শ্রদ্ধাশীল নই কার্ল মার্ক্স বা ফ্রেডরিখ নিটশের প্রতি। সেক্সি সাউন্ডিং হোকাস-পোকাস কথা বলতে কোনো স্কিল লাগে না, কোনো মেধা লাগে না।
(২৮.২.১২ তারিখে প্রথম প্রকাশিত)
(২৮.২.১২ তারিখে প্রথম প্রকাশিত)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন