আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ১০ আগস্ট, ২০১৫

মুসলিম ভোটের জন্য সরকারী আর্জি

লিখেছেন অপ্রিয় কথা

প্রিয় ৯০% মুসলিম, তোমরা শুধু আমাদের আজীবন ভুলই বুঝে গেলে। আজীবনই মনে করে গেলে আওয়ামি লীগ সরকার মানে হিন্দুয়ানি সরকার। এই দেখ না, পাঁচ মাসে চার নাস্তিক হত্যা হল, আমরা নাস্তিক হত্যার বিচার করছি কি? তোমাদের ধর্মকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা তো আমরা রাষ্ট্র চালাচ্ছি। বিএনপি-জামাত কি কখনো ৫০০ মসজিদ নির্মাণের কথা বলেছে? আমরাই তো পাঁচশ মসজিদ নির্মান করার ঘোষণা দিয়েছি, যাতে তোমরা ঘর থেকে বেরিয়ে এক পা ফেলেই নামাজ পড়তে পারো। তোমরা ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যাতে বুক ফুলিয়ে গর্ব করতে পারো, তার জন্য আমরা ম্রাদ্রাসার শিক্ষার হাড় বাড়িয়ে দিয়েছি। মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক থেকে আমরা বিজ্ঞান ও প্রগতিশীল মালাউন কবি-লেখকদের রচনা উঠিয়ে দিয়েছি। যারা আল্লাহ আর মহানবীকে কটূক্তি করে, তাদের দমন করার জন্য ইসলামের শরিয়া আইন ব্লাসফেমি-সম ৫৭ ধারা আইন পাস করেছি। আল্লাহকে অবিশ্বাস করলে যেন আমরা তাদের দমাতে পারি। তোমাদের মনমতো চলার জন্যই তো আমরা সারা বছর সংখ্যালঘু হিন্দু-মালাউনদের অত্যাচার নির্যাতনের ওপর রাখছি। প্রতিনিয়ত তাদের বাড়িঘর লুট করছি, মন্দির ভাঙছি। তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করে তাদের ঘরবাড়ি দখল করার জন্য তোমাদের বারবার সুযোগ দিচ্ছি। তোমাদের খুশি করার জন্যই তো আমরা আদিবাসীদের পাহাড়ি অঞ্চলে তোমাদের সেটেল করে দিয়েছি। যাতে তোমরা আদিবাসী মেয়েদের মর্জিমাফিক ধর্ষণ করতে পারো, তাদের বিধর্মী ভেবে হত্যা করতে পারো, তাদের ভূমি দখল করতে পারো।

প্রিয় মুসলিমগন, তোমরা কেন আমাদের আওয়ামি লীগ সরকারকে বারবার ভুল বোঝো, বুঝি না। এই দেখ না, আমরা হেফাজতে ইসলামের নেতা আল্লামা শফিকে ৩২ কোটি টাকার রেলওয়ের জমি দান করে দিয়েছি, যাতে শফী হুজুর আরো বেশি বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের চাষ করে আমাদের আল্লার ইসলামকে হেফাজত করতে পারেন। শফী হুজুর যে প্রকাশ্যে বললেন - নাস্তিক হত্যা ওয়াজিব, আমরা কি তাকে গ্রেপ্তার করেছি? করিনি। কেন? তোমরা কি তা জানো না? কারণ আমাদের আওয়ামি লীগ সরকার চায় এ দেশে ৯০% মুসলমান। এদের ভোটে আমাদের ক্ষমতায় আসতে হবে। তাই আমরা ইসলাম নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করবো না। আদিবাসীদের নির্যাতন-ধর্ষণ, হিন্দু মালাউনদের অত্যাচার আর নাস্তিকদের যেমন খুশি তেমন তোমরা হত্যা করো। আমরা এর বিচার করবো না। আমরা তোমাদের, ৯০% মুসলমানের, পাশেই আছি। প্লিজ, তোমরা আমাদের ভোট দিয়ো। আমাদের বারে বারে ক্ষমতায় এনো। আমরাই নাস্তিকহত্যা, মালাউন আর আদিবাসী নির্যাতন করে ইসলামকে সমুন্নত রাখবো।

প্রাণের মুসলিম ভাইয়েরা, বিএনপি-জামাতরা কি কখনো আমাদের মহানবীর প্রিয় মদিনা সনদের কথা বলেছে? আমরাই তো প্রথম বললাম, মদিনা সনদে রাষ্ট্র চালাবো। তোমরা কেন বারবার ধারণা করো যে, আমাদের আওয়ামি লীগ সরকার ইসলামের শত্রু? কেন ধারণা করো যে, আওয়ামি লীগ ক্ষমতা এলে মসজিদে উলুর ধ্বনি শোনা যাবে? এই দেখো না, ২০১২ সালে আমাদের ইসলামের মুসল্লিরা ধর্মানুভূতিতে আঘাতের ধোঁয়া তুলে রামুতে বৌদ্ধদের ৩০০ বছরের পুরোনো মন্দির ভেঙে দিল, আমরা কি সেই সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের বিচার করেছি? আইনের আওতায় এনে বিচার করে তোমাদের শাস্তি দিয়েছি? না, দিইনি। কারণ তোমরা মুসলমান। ৯০% মুসলমানদের অপরাধের বিচার করলে আমরা ভোট পাব না। আমরা ক্ষমতায় আসতে পারবো না। তাই তোমাদের বিচার করিনি। এই দেখো না, এককালে ইনু-মেমনরা কম্যুনিস্ট ছিল, জাসদ-বাসদ দল করত। তারা জাঁদরেল নাস্তিক ছিল, আল্লা-খোদা মানতো না। এখন টুপি পরে খাস মুসল্লি হয়ে গেছে। আমরাই তো তাদের একেকটি পদ দিয়ে ক্ষমতার চেয়ারে বসিয়ে খাস মুসল্লি বানাতে সক্ষম হয়েছি। বিএনপি-জামাতরা কি তাদের কখনো রাজপথ থেকে সরাতে পেরেছিল? তাদের মুসল্লি বানাতে পেরেছিল?

প্রাণপ্রিয় মুসলমানগন, তোমরা আর বিএনপি-জামাতকে ভোট দিয়ো না। দলে দলে আওয়ামি লীগ সরকারে ভোট দাও। আমরা এখন ইসলামিক দলের প্রতিযোগিতায় বিএনপি-জামাত ও জাতীয় পার্টির এরশাদকেও ছাড়িয়ে গেছি। বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলমান তোষণে আমরাই শ্রেষ্ঠ দল। এই তো গত ক'দিন আগে নাস্তিক নিলয়কে হত্যা করা হলো। আর কিছুদিন সবুর করো, আমরা পরোক্ষভাবে আরেকজন নাস্তিককে হত্যা করবো (পড়ুন: আরেকজন নাস্তিককে হত্যা করেছে বলে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ঘোষণা দেবে), তারপর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করে আরো একবার আওয়ামি লীগ সরকারকে ইসলামিক দল বলে প্রমাণ করবো। হে ৯০% মুসলমান ভাইয়েরা, তোমরা আমাদের আওয়ামি লীগকে ক্ষমতা দাও, আমরা তোমাদের দেশকে আল্লা ও ইসলামের শাসনের চাদরে মুড়ে দেব।

মন্তব্য:
এদেশে ৯০% মুসলিম ভোট পাওয়ার জন্য আওয়ামি লীগ থুক্কু ওলামা লীগ আর কতো নৈতিকতার স্খলন করবে কিংবা ক্ষমতার জন্য কতো ভয়ংকর নীতি গ্রহণ করবে, জানি না। এমনিতে তো তারা সংখ্যালঘুদের শয়ে শয়ে নির্যাতন করে দৌড়ের ওপর রাখে। তবে তারা এখন এক-একটি নাস্তিকহত্যা মানে ধরে নেয়, আওয়ামিলীগ সরকারকে একেকবার ইসলামিক দল প্রমাণ করার সুযোগ! তারা তো নাস্তিকহত্যার বিচার করছে না। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করছে না। ৯০% মুসলিমের কাছে আওয়ামি লীগকে ইসলামি দল প্রমাণ করার এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর কী আছে! তবে একটা কথা বলে রাখি, এই ৯০%  মুসলিমের মধ্যে অধিকাংশরা যতদিন ইসলামের অন্ধকারকে টপকে সভ্য, শিক্ষিত ও সচেতন না হচ্ছে, ততদিন সরকারী মদদে হোক বা পরোক্ষভাবে হোক নাস্তিকহত্যার এই রীতি চলতেই থাকবে। দলকে একেক বার ইসলামিক দল প্রমাণ করার জন্য নাস্তিকহত্যা হতেই থাকবে। আসলে আনসারুল্লা বাংলা টিম বলে কি কিছু আছে? নাকি "আনসারুল্লাহ বাংলা" নামটি ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্র? অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হতেই পারে যে, এসব নাস্তিক-ব্লগার হত্যা আসলে পরোক্ষভাবে সরকারী মদদেই চলছে, আর নাম দেয়া হচ্ছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের। এটা যদি সরকারী মদদে না হয়, তাহলে তারা বিচার করছে না কেন? তাদের সরকারী পৃষ্ঠপোষকদের মদদদাতার নাম বেরিয়ে আসবে বলে? মনে পড়ে যায় বিএনপি-জামাত আমলে শাখাউর আব্দুর রহমান আর বাংলা ভাইয়ের কথা?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন