আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ঈশ্বরের অনৈশ্বরিক কর্মকাণ্ড - ৩

লিখেছেন সমকোণী বৃত্ত

কুরান, হাদিস ও ইসলামিস্টদের মতে - এই জীবনটা হল পরীক্ষা, পৃথিবী হল পরীক্ষার হল আর আল্লাহ হল পরীক্ষক। আল্লাহ মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কে আল্লাহ-নবীর কথা মত চলল, আর কে চলল না, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, আচরণ এসবের ওপরই পরীক্ষা। এর ফলাফল জানা যাবে রোজ হাশরের দিনে।

আল্লাহ যেহেতু পরীক্ষক, তাই পরীক্ষা যেন সুষ্ঠ হয়, সেই দায়ভার আল্লাহরই ওপরে। যে যেরকম পারে, সেরকমই পরীক্ষা দেবে। এখানে যদি পরীক্ষক কোনো ছাত্রকে সাহায্য করে, তাহলে সেটা হয় পক্ষপাতিত্ব এবং এর ফলে পরীক্ষা সুষ্ঠ হয় না এবং পরীক্ষকও অসাধু বলে আখ্যায়িত হয়। তেমনি ডিস্টার্ব করলেও তাই।

তাহলে আসুন দেখা যাক, আল্লাহ তাঁর দায়িত্ব পালনে কতটা নিষ্ঠাবান। সকলকে সমান চোখে দেখে আল্লাহ কি সবাইকে যার যার মত করে পরীক্ষা দিতে দিয়েছে? না। যেমন, 

ক) আল্লাহ নুহকে সৎপথে পরিচালিত করেছিলেন (সূরা আনাম: ৮৪)! আল্লাহ কেন পরীক্ষার হলে হস্তক্ষেপ করে কাউকে সুযোগ করে দেবেন? স্বজনপ্রীতি দেখালে কি পরীক্ষা সুষ্ঠ হয়?

খ) আল্লাহ না চাইলে ইসলাম গ্রহণ আকাশে আরোহনের মত কঠিন। এবং তিনি যাকে পথ দেখাতে চান, তার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দেন (আনাম :১২৫)! তাহলে ইসলাম মানা অর্থাৎ পরীক্ষা শুধু ছাত্র চাইলেই ভাল হবে না, পরীক্ষকের ওপরও নির্ভর করে!

গ) সূরা আল আন-আম:১২৩ - "আর এমনিভাবে আমি প্রত্যেক জনপদে অপরাধীদের জন্য কিছু সর্দার নিয়োগ করেছি-যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করে।" আল্লাই যদি অপরাধ বৃদ্ধির জন্য সর্দার নিয়োগ করে, তাহলে অপরাধীদের শাস্তি দিলে মুলহুতা আল্লাহকেও শাস্তি দিতে হয়!

ঘ) আল্লাহ কাফেরদের নিধনের জন্য মুসলিমদের পক্ষে এক হাজার ফেরেশতারা লাগিয়ে দিয়ে কাফিরদের পরাজিত করে (সুরা আনফাল: ৯)

তাহলে পরীক্ষা কীভাবে সুষ্ঠ হয়? কাফেরদের আল্লাহ কেন পরীক্ষার হলেই শাস্তি দিয়ে দিলেন? তারা কি মরতো না? মরার পর অর্থাৎ পরীক্ষার ফলাফলের পরে কি শাস্তি দেয়া যেত না? নুহের সময় অনেককেই ডুবিয়ে মারলেন পরীক্ষার হলেই ও পরীক্ষা শেষ হবার আগেই।

পরীক্ষার সময় শেষ হবার আগেই কেন কিছু ছাত্রের খাতা নিয়ে নেবেন? হয়ত বলতে পারেন, হলে খারাপ আচরন করলে খাতা নেওয়া যায়। কিন্তু আল্লাহ এক্ষেত্রে পারবেন না, কেননা পরীক্ষাই হচ্ছে আচরণের। আবার ভাল-খারাপ দুটোই করার ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছে। তাহলে অন্যদের কেন ডুবিয়ে মারলো পরীক্ষা শেষ না হতেই? আবার হাজার ফেরেশতা পাঠিয়ে কেন কাফিরদের মারা হল পরীক্ষা শেষ হবার আগেই?

যদি বলেন, "কাউকে সাহায্য করার জন্য আল্লাহ ওদের মারেনি, ঐ কাফেরদের মৃত্যু ওভাবেই হবে লেখা ছিল। আর আল্লাহ পরীক্ষার হলে সাহায্য বা ডিস্টার্ব করেন না।" - তাহলে কি আল্লাহ নবীকে সাহায্য করার জন্য ফেরেশতা পাঠাযননি? আল্লাহকে আমাদের মিথ্যা বললেন কেন যে, তিনি বিভিন্ন নবীকে যেমন ইউনুসকে সাহায্য করেছেন মাছের পেট থেকে উদ্ধার করে? হলে মানে দুনিয়াতে তিনি যদি কাউকে সাহায্য না করেন, তাহলে 'দুয়া ইউনুসের অনেক ফজিলত'-এর এর কী হবে? আল্লাহ সাহায্য না করলে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে সময় নষ্ট করবো কেন?

এর পরও যদি মুমিন উত্তর দিতে পারে, "ভাল কাজের জন্য সাহায্য চাইলে আল্লাহ সাহায্য করবেন।" - এটাও ঠিক না, কারণ চোরও ত আল্লার কাছে সাহায্য চায় যেন সে ধরা না পড়ে। এবং আল্লাহ তো তাকেও সফলভাবে চুরিতে সাহায্য করেন, করেন না?

"আরে না,আল্লাহ চুরির ক্ষেত্রে সাহায্য করেন না।" - তাহলে আল্লার সাহায্য ছাড়াই শুধু নিজ শক্তিতেই চোর সফল হয়ে যায়?

"আরে না,চোর ত ধরাও পড়ে।" - তাই নাকি? তাহলে যেক্ষেত্রে ধরা খেয়েছে, সেক্ষেত্রে আল্লাহ জয়ী, কারণ তিনি সাহায্য করেননি, তাই ধরা পড়েছে। আর যেক্ষেত্রে ধরা পড়েনি, সেক্ষেত্রে চোর জয়ী, কেননা আল্লাহর সাহায্য ছাড়াই সফল।

"আল্লাহই জানেন!" - মোদ্দাকথা হল, আল্লাহ সাহায্যই বা করতে যাবেন কেন? নিজের মত করে পরীক্ষা দিতে দিক।

এবার আসি ঝামেলা করার প্রসঙ্গে। আল্লাহ পরীক্ষায় ঝামেলা করার জন্য স্থায়ীভাবে ইবলিশকে নিযুক্ত করেছেন (গত পর্বে প্রমাণ করেছি, ইবলিশের চেয়ে দোষ আল্লার বেশি এক্ষেত্রে) মানুষকে পরীক্ষায় ডিস্টার্ব করার জন্য। এবার ধরুন, একটা দৌড় প্রতিযোগিতা চলার সময়ই কোনো দৌড়বিদকে আটকে রেখে কিছুক্ষণ পর ছাড়লেন। তারপর সে যদি পুরস্কার না পায়, তাকে কিন্তু দোষ দেওয়া যায় না। তাহলে মানুষের পরীক্ষা চলার সময়ে ইবলিশ কেন ডিস্টার্ব করবে? তাহলে তো পরীক্ষা সুষ্ঠ হল না।

এখন যদি বলেন, "আল্লাহ এটাই পরীক্ষা করছে, আমরা আল্লাহর দেখানো পথে চলি নাকি ইবলিশের দেখানো পথে চলি?" - সবচেয়ে বড় প্যারাডক্সটা তো এখানেই। কীভাবে কেউ বুঝবে, কোনটা আল্লার দেখানো আর কোনটা ইবলিশের দেখানো কাজ?

আল্লাহ ও ইবলিশ দু'জনই তো একই ছাঁচে গড়া। তাই দু'জনই কাজকে শোভন করে দেখায়। যেমন, 

সূরা আল আন-আম: ১০৮ - "তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে দিয়েছি।"

এবার শয়তানের ক্ষেত্রে... সূরা আল-আনফাল: ৪৮ - "আর যখন তাদের কাজকে শোভন করে দিল শয়তান তাদের দৃষ্টিতে এবং বলল যে, আজকের দিনে কোন মানুষই তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর আমি হলাম তোমাদের সমর্থক।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন