আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

"বোরকার মধ্যে একেকটা সাক্ষাৎ শয়তান!"

লিখেছেন ভবঘুরে বিদ্রোহী

আজই সন্ধ্যায় একটি জরুরি প্রয়োজনে কোম্পানীঘাট ম্যাটাডর প্লাস্টিক ফ্যাক্টরীঘেষা মসজিদসংলগ্ন ছোট্ট ব্রিজটি যখন পায়ে হেঁটে পার হচ্ছি, দাড়ি-টুপি-পাগড়ি-পাঞ্জাবি পরা ইয়াবড় এক হুজুরকে উচ্চস্বরে বলতে শুনলাম, "রোরকা পরা একেকটা সাক্ষাৎ শয়তান!"

ঈশ্বর-শয়তান অনুসন্ধানরত, স্বেচ্ছানিযুক্ত এক সদস্যবিশিষ্ট অভিযাত্রীদলের প্রধান হিসাবে ঈশ্বরের সহোদর শয়তান দর্শনের হঠাৎ এমন সুযোগ পাওয়ায় আমার যারপরনাই কৌতূহল বেড়ে গেলো। অথচ ডানে-বামে সামনে আশেপাশে দৃশ্যমান বোরকাপরা এমন কোনো শয়তানের অস্বাভাবিক তেমন কোনো কর্মকাণ্ডই অধম ভবঘুরের খোলা চোখে ধরা পড়লো না।

আমি অগত্যা ঘাঢ় কাত করে আড়চোখে পেছনে তাকালাম, হুজুর পাগড়িওয়ালা আশেপাশে তাকিয়েই হয়তো উচ্চস্বরে এমন বিকট বিদ্রূপাত্মক মহামন্তব্যখানা করছেন, তার চোখ তো আর শয়তান অধরা নয়। কিন্তু সে তো ততোক্ষণে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে গ্রীবা উঁচিয়ে দ্রুতপদে ছোট্ট কালভার্ট ব্রিজ পেরিয়ে অপর প্রান্তে পৌঁছে গেছে।

আমি দেখলাম, ব্যস্ত রাস্তায় আশেপাশে বোরকা-পরা দু'-চারজন যে নেই, এমন নয়, বোরকা ছাড়াও নানাবয়সী নানা পোশাকে নানা পেশার পথচারী মেয়ে বা মহিলারা হতবাক হয়ে একে অন্যের দিকে অজানা অপরাধে অসহায়ের মতো তাকাচ্ছে; কে কী বলবে পঞ্চাশোর্ধ বাপসম এই নারীবিদ্বেষী অতিধার্মিক পাগড়িওয়ালা কাঠমোল্লা পুরুষটাকে? আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় আমারও আর কিছু বলার অবশিষ্ট আগ্রহ রইলো না। তাছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আর কতো জায়গাই বা এমন আগ্রহ দেখাবো, সেটাও তো নিষ্ফলা। দেশজুড়ে এদের সংখ্যাও তো এড়িয়ে যাওয়ার মতো নগণ্য নয়।

কিন্তু যেটা আমার চোখে একদম এড়ায়নি, শিল্পকারখানায় ডিউটিশেষে সন্ধ্যায় কর্মফেরত ঘরমুখো ক্লান্তশ্রান্ত মেয়েগুলো, ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় বোরকা পরা সত্ত্বেও এই সব পিতৃবয়সী ওলওয়ালা কাঠমোল্লা পাগড়িওয়ালাদের কুরুচিকর মন্তব্য থেকে যদি নিজেরা রেহাই না পায়, তবে সেখানে টিনএজার বখাটে ছোকরাদের কথা কী বলবো! দিনশেষে কর্মক্লান্তি নিয়ে পায়ে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে নিজেদের মাঝে সারাদিনের জমানো রাজ্যের কথা, কিছুটা চটুলতা, চঞ্চলতা, খুনসুটি, ভাবনা লেনদেন করার মতো খুদে অবকাশটুকু ছাড়া ওরা তো আর এক মুহূর্তও ফুরসৎ পায় না, শহরতলীর দিকে আবাস হবার সুবাদে সেটা আমার চোখে নিত্যকার স্বাভাবিক চেনা চিত্র। ঘরে ফিরতেই তো একগাদা নিজস্ব কাজ, বাজার করা, রান্নাবান্না, সংসার গোছানো, ঘুম, ভোর হলেই তো ফের কাজের ধুম, ফের ব্যস্ততা। তার মাঝে নিজেকে নিয়ে আলাদাভাবে এতোটুকু ভাবনার সময় কোথায়? সারাক্ষণ অন্যের পোশাকে সুঁই-সুতো কাটিং স্যুইং মাননিয়ন্ত্রনে ব্যস্ত থেকে দিনশেষে নিজের পোশাকি মান নিয়ন্ত্রনের সুযোগটাই বা কোথায়?

এই রতিগ্রস্ত মতিভ্রষ্ট বুড়োভামের ভীমরতিতে ভাবনার তীব্র আক্ষেপ - ঠিক কেন যে শয়তানগুলো বোরকা পরেছে, বোরকা পরাটাই যেন অপরাধ, বোরকা না পরে প্যান্টশার্ট কিংবা বিকিনি পরলেও একই অপরাধই হতো। অপরাধ হলো - কেন যে শয়তানগুলোকে অনাব্রু বস্ত্রহীন আলাদাভাবে দেখতে পেলো না, কেন যে শয়তানগুলো নিজের মতো করে হলো না, তাতে সদামগ্ন সাক্ষাৎ শরাব-হুর-গেলমান নিয়ে বিশ্রী হুড়োহুড়ি গড়াগড়ি কল্পনারত উম্মত্যের পাঞ্জাবীর পকেট ফুঁড়ে সকলের অগোচরে ঈমানদণ্ড মজবুতকরন হাতমৈথুন কম্মটিও সেরে নিতে পারতো, আহারে বেচারা বড্ড বেকায়দাগ্রস্ত পাগড়ীওয়ালা! 

উল্লেখ্য যে, আমাদের মহানবীজিও কিন্তু একদিন রাস্তাধরে হেঁটে যাওয়া এমনই এক পরনারী দেখে নিজের ঈমানদণ্ড কোনোভাবে সামলাতে না পেরে দ্রুত নিকটস্থ এক স্ত্রীর ঘরে গিয়ে পরিপূর্ণ তৃপ্ত হয়ে ফিরে এসে উপস্থিত সহচরদের উদ্দেশে বললেন, তোমাদের মধ্যেও কারও যদি অন্য নারী দেখে এমন সহবত উম্মাদনা জাগে, তবে দ্রুত তোমাদের স্ত্রীদের কাছে যাবে। কারণ পরনারী আসে শয়তানের বেশে, আর ফিরেও যায় সে শয়তানের বেশে। যেমন, অন্দরে অধিকৃত এমন একজন শয়তানের কাছে গিয়েই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শেষ নবী নিজ ঈমানদণ্ড ঠাণ্ডা করে মাত্রই ফিরেছেন। অন্দরের সেই মহিলা সম্পর্কে আমারও পরনারী লাগে।

আর কতো বলবো যে, ইসলামই নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান। দেখুন, বোরকা হিজাবের মধ্যে না কি একেকটা সাক্ষাৎ শয়তান!

ওহ! কারা যেন আবার পইপই করে বলে বেড়ান, বোরকা-হিজাব হলো নারীর প্রতিরক্ষামুলক সহীহ শরীয়তি পোশাক। কিন্তু এই বোরকা-হিজাব কিন্তু বখাটে বদ মুমিনের চোখে আদৌ কোনো নিরাপত্তা ঠুলি পরাতে পারলো, না পারলো নারীকে বিদ্রূপের হাত থেকে আদৌ রক্ষা করতে? তো এই নারীবিদ্বেষী হুজুরদের কামাতুর লোলুপ কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে, আমার মতো আশেপাশে দাঁড়ানো নপুংসকদের নীরব দৃষ্টিপাতে থুতু মেরে নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করতে সহীহ শরীয়তি বোরকা হিজাবের পাশাপাশি বামপায়ের সহিহ শরীয়তি হাওয়াই চপ্পলখানা সময়ে অসময়ে কখন যে, হাতে তুলে নেয়াই জরুরি মনে করে বসে, বলা তো যায় না। তখন আবার কেউ আগ বাড়িয়ে ফতুয়াইয়েন না, পাঞ্জাবি-পাগড়ির মধ্যেই একেকটা সাক্ষাৎ...! অাওজুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন