আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

বাঙালির পাকাপোক্ত পাকিপ্রেম

লিখেছেন জুলিয়াস সিজার

১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড ফুটবল ম্যাচটার কথা নিশ্চয় জানেন? সেই বহুল আলোচিত ম্যাচ, যে-ম্যাচে ম্যারাডোনা হাত দিয়ে গোল করে সেটাকে আখ্যা দিয়েছিলেন 'হ্যান্ড অফ গড' নামে।

ম্যাচটি শুরু হওয়ার আগে থেকেই মিডিয়াসহ সারা পৃথিবীর মানুষ-জন উত্তেজনায় কাঁপছিল, কারণ সবাই জানতো, বেশ হাইভোল্টেজ একটি ম্যাচই হতে চলেছে এবং তার পেপিছনের কারণ হচ্ছে রাজনীতি; ১৯৮২ সালের আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ডের মধ্যকার 'ফকল্যান্ডস' যুদ্ধ। এই যুদ্ধে আর্জেন্টাইন সেনাবাহিনীকে হারিয়ে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ দখল করে নিয়েছিল ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। 

ম্যারাডোনাকে যখন সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, "একজন আইকন প্লেয়ার হয়েও এভাবে হাত দিয়ে গোল করে আপনি কীভাবে প্রতারণা করতে পারলেন?"
ম্যারাডোনা উত্তর দিয়েছিলেন,"চোরের থেকে চুরি করলে কোনো দোষ নেই।"

স্পষ্টতই 'ফকল্যান্ডস' যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। ফকল্যান্ডস দ্বীপপুঞ্জ দখল করে নেওয়াতে ব্রিটিশদের চোর ডেকেছিলেন ম্যারাডোনা। কিংবদন্তি ম্যারাডোনাও খেলার সাথে রাজনীতি মিশিয়েছিলেন।

১৯৮৮ ইউরো কাপের 'জার্মানি বনাম নেদারল্যান্ডস' সেমিফাইনাল ম্যাচে জার্মানিকে হারানোর পর সমগ্র নেদারল্যান্ডস-এর সব মানুষ খুশিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। ফাইনালে নেদারল্যান্ডস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেও ডাচরা ততো আনন্দ করেনি। সেদিনের চেয়েও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল সেমিফাইনালে জার্মানিকে হারানোর পর; কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নেদারল্যান্ডস-এর ওপর চালানো জার্মান সেনাদের আগ্রাসন ডাচরা তখনও ভুলতে পারেনি - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার ৪৩ বছর পরেও।

এখনও জার্মানি-নেদারল্যান্ডস ফুটবল ম্যাচগুলো তাই উত্তেজনার বারুদ ছড়ায়। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ডাচ সুপারস্টার ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড তো জার্মানির স্ট্রাইকার রুডি ফোলারের মুখে থুথু ছিটিয়ে দিয়েছিলেন। তাও একবার নয় দুই-দুইবার। ফলাফল - লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রাইকার্ড। এই দুই ফুটবল পরাশক্তি যখন নিজেদের মুখোমুখি হয়, তখন খেলাটা শুধুমাত্র একটি ফুটবল ম্যাচ থাকে না। ইতিহাস এবং নিজেদের জাতিগত অহংবোধও সেখানে চলে আসে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রিকেট লড়াই যে ক্রিকেটের চেয়েও বেশি কিছু, তার কারণও ঐ রাজনীতি, দুই দেশের মধ্যকার চিরবৈরিতা।

ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব আর রাজনীতির কারণে খেলার সাথে রাজনীতি মেশাতে যায় পৃথিবীর সব জাতিই। শুধু খেলার সাথে রাজনীতি মেশায় না পৃথিবীর সবচেয়ে নির্লজ্জ জাতি বাঙালি।

৭১-এ ৩০ লক্ষ শহীদ, তিন লক্ষ বীরাঙ্গনাও, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধও তাদের মনে পাকিস্তানিদের প্রতি ঘৃণাবোধ আনতে পারেনি। পাকিস্তানি সৈন্যরা বাঙালি মেয়েদের ধর্ষণ করার পর মেয়েদের শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে পাত্রে সংরক্ষণ করে রাখতো। এমনও ঘটনা ঘটেছে, কোনো বাড়িতে যাওয়ার পর পাকিস্তানি সৈন্যরা বাবা এবং ছেলেকে আদেশ দেয় মেয়ে ও মা'কে ধর্ষণ করতে। কোনো বাবার পক্ষে মেয়েকে কিংবা ছেলের পক্ষে মা'কে ধর্ষণ করা সম্ভব নয়। অপারগতা জানানোর পর পাকিস্তানি হানাদারেরা প্রথমে বাবা-ছেলেকে খুন করে মা-মেয়ের সামনেই। তারপর মা-মেয়েকে ধর্ষণ করে।

এতকিছুর পরেও বাঙালিদের অন্তরে পাকিস্তানিদের জন্য ভালোবাসার কমতি নেই। তারা খেলার সাথে রাজনীতি মেশাতে পারে না। ৭১-এ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বধ্যভূমি, কাকে-শকুনে খাওয়া মানুষের লাশ, ক্ষতবিক্ষত বীরাঙ্গণাদের দেহও বাঙালিদের মন থেকে পাকিস্তান-প্রেম তাড়াতে পারে না। বাঙালি এতটাই উদারপন্থী যে, তারা এমন নির্মম ইতিহাসের পরেও খেলার সাথে রাজনীতি মেশাতে পারে না।

পাকিস্তানি খেলোয়াড় দেখলে হুড়োহুড়ি করে হাত মেলাতে যায়, 'ম্যারি মি আফ্রিদি' প্ল্যাকার্ড নিয়ে গ্যালারিতে যায়, মুখে পাকিস্তানের পতাকা আঁকে।

নিজেদের গৌরবময় ইতিহাসের প্রতি অশ্রদ্ধা জানানো পৃথিবীর সবচেয়ে অকৃতজ্ঞ জাতি বাঙালি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন