আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬

ইসলামী পাটিগণিত - ২

লিখেছেন আবুল কাশেম


সৃষ্টি-সংখ্যায় বিভ্রান্তি

আল্লাহ্‌ পাকের সৃষ্টি-সময়ের গোলমাল নিয়ে আজকাল বেশ রচনা লেখা হয়েছে। এখানে সংক্ষিতভাবে দেখা যাক আল্লাহ কেমন করে এই বিষয়ে গণনা করেন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বাইবেলে লেখা আছে - ঈশ্বর ছয়দিনে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেন এবং সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেন। আরও মনে রাখা দরকার যে, পৃথিবী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের এক অতিশয় ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।

দেখা যাক, এই ব্যাপারে কোরানে কী লেখা আছে:
৭:৫৪ নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্‌। তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র স্বীয় আদেশের আনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ্‌ বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
এই আয়াতে আল্লাহ্‌ পাক পরিষ্কার বলেছেন, পৃথিবী ও আকাশসমূহ সৃষ্টি করতে তাঁর ছয়দিন লেগেছে। নভোমণ্ডল বলতে আল্লাহ্‌ কী বোঝাচ্ছেন, তা পরিষ্কার নয়। তাফসিরবিদগণ নভোমণ্ডলকে সপ্ত-আকাশই মনে করেন। আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে যে এর কোনো যোগাযোগ নেই, তা বলার দরকার নেই। কোরানের অনেক আয়াতেই আকাশকে ছাদ বলা হয়—অর্থাৎ পৃথিবীর উপরে রয়েছে সাতটি ছাদ। যেমন এই আয়াত:
৪০:৬৪ আল্লাহ্‌ পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ্‌, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ্‌ বরকতময়। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
তাই ৭:৫৪ আয়াতে ছয়দিনের সৃষ্টি বলতে পৃথিবী এবং তার উপরের সাতটি ছাদের কথাই বলা হয়েছে।

আরও অনেকগুলো আয়াতে আল্লাহ্‌ ছয়দিনে পৃথিবী ও নভোমণ্ডল সৃষ্টির কথা বলেছেন। এই সব আয়াতগুলো হচ্ছে: ১০:৩, ১১:৭, ২৫:৫৯, ৫০:৩৮, ৫৭:৪।

এখানে লক্ষণীয় যে, ৭:৫৪, ১০:৩, ১১:৭, ৫০:৩৮, ৫৭:৪ আয়াতগুলিতে আল্লাহ্‌ বলেছেন—প্রথমে নভোমণ্ডল সৃষ্টি হয়েছে, তার পর ভূমণ্ডল বা পৃথিবী।

অর্থাৎ, নভোমণ্ডল (প্রথম) + ভূমণ্ডল (দ্বিতীয়) সৃষ্টির সময় = ৬ দিন।

আয়াত ২৫:৫৯-এ আল্লাহ্‌ বলছেন, তিনি প্রথমে নভোমণ্ডল, তারপর ভূমণ্ডল, তারপর এতদ্বয়ের মধ্যে যাবতীয় যা আছে, সব কিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে।

অর্থাৎ নভোমণ্ডল (প্রথম) + ভূমণ্ডল (দ্বিতীয়) + এতদ্বয়ের মধ্যে সব কিছ সৃষ্টির সময় (তৃতীয়) = ৬ দিন।

ওপরের দুটি সমীকরণ থেকে আমরা বলতে পারি—মহাশূন্যে যা আছে, যেমন, ছায়াপথ, নীহারিকা, অন্যান্য গ্রহ, ধুমকেতু, কৃষ্ণ গহবর...ইত্যদি তৈরি করতে আল্লাহর সময় লেগেছে = ০ (শূন্য) দিন।

তাজ্জব হবারই ব্যাপার।

এবার দেখা যাক নিচের আয়াতগুলো:
৪১:৯ বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থির কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।
৪১:১০ তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন—পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।
৪১:১১ অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
৪১:১২ অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ্‌র ব্যবস্থাপনা। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
এই আয়াতগুলো থেকে সাধারণ জ্ঞানে আমরা যা বুঝি, তা এই প্রকার:

প্রথমে আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করলেন পৃথিবী বা ভূমণ্ডল—সময় লাগলো ২ দিন।

দ্বিতীয়ত, আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করলেন পৃথিবীর ওপরিভাগে পর্বতমালা ও খাদ্যদ্রব্য—সময় লাগলো ৪ দিন।

তৃতীয়ত, আল্লাহ্‌ সৃষ্টি করলেন নভোমণ্ডল—সময় লাগলো ২ দিন।

এখন এই সংখ্যাগুলো যোগ করা যাক, অর্থাৎ ২ + ৪ + ২ = ৮ দিন

এইসব দ্ব্যর্থক এবং বিসদৃশ আয়াতের বিব্রতকর অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য কোরানের ব্যাখাকারীরা কতই না কসরত করে যাচ্ছেন। অনেকে বলেন: কোরানের ছয় দিন সৃষ্টির অনেক কাজই যুগপৎ চলেছে—অর্থাৎ যখন আল্লাহ্‌ পৃথিবী বা ভূমণ্ডল সৃষ্টি করছিলেন, সেই সাথে নভোমণ্ডল বা সপ্তাকাশ নির্মাণের কাজও চলছিল। তার অর্থ দাঁড়ায়—ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল সৃষ্টি করতে সর্বমোট সময় লেগেছে দুই দিন।

কিন্তু ৪১:৯-১২ পরিষ্কার বলা হচ্ছে পৃথক পৃথক সৃষ্টির কথা—পৃথিবী—তারপর পর্বতমালা ও খাদ্য দ্রব্য—তারপর আকাশমণ্ডলী।

আয়াত ২:২৯-এ আল্লাহ্‌ লিখেছেন:
২:২৯ তিনিই সে সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। অতঃপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ্‌ সবিষয়ে অবহিত। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন বাংলা (অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
এখানে আল্লাহ তা’আলা এই সব সৃষ্টির সময় উল্লেখ করেননি।

অর্থাৎ আল্লাহ্‌ প্রথমে ভূমণ্ডল এবং এর সাথে জড়িত সব কিছু তৈরি করলেন। তারপর তৈরি করলেন সপ্ত-আকাশ—সময় = অনির্দিষ্ট।

অবশ্য, অনেকেই বলতে পারেন যে, এই আয়াতে শুধু সৃষ্টি-সংবাদ বা তথ্যই দেয়া হয়েছে—কোনো সময় দেওয়া হয়নি।

আমরা এটাও অনুমান করে নিতে পারি, আল্লাহ্‌ তাৎক্ষণিকভাবে এইসব তৈরি করেছেন। কারণ আল্লাহ কয়েক জায়গায় লিখেছেন যে, তিনি চাইলেই তা সাথে সাথে হয়ে যায়। যেমন:
১৯:৩৫ আল্লাহ্‌ এমন নন যে, সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা, তিনি যখন কোন কাজ করা সিদ্ধান্ত করেন, তখন একথাই বলেন: হও এবং তা হয়ে যায়। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
অর্থাৎ, আল্লাহ্‌ প্রথমে ভূমণ্ডল এবং এর সাথে জড়িত সব কিছু তৈরি করলেন। তারপর তৈরি করলেন সপ্ত-আকাশ—সময় = ০ দিন।

আল্লাহ্‌র এই খামখেয়ালিপনার ব্যাপারে ইব্‌নে কাসীরের মন্তব্য উল্লেখযোগ্য। যেমন ২:২৯ আয়াত সম্পর্কে ইব্‌নে কাসীর লিখেছেন:
এ আয়াত দ্বারা জানা যাচ্ছে, যে মহান আল্লাহ্‌ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সাতটি আকাশ নির্মাণ করেছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অট্টালিকা নির্মাণের এটাই নিয়ম যে, প্রথমে নির্মাণ করা হয় নীচের অংশ এবং পরে উপরের অংশ। মুফাস্‌সিরগণ এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন যা ইনশাআল্লাহ এখনি আসছে। কিন্তু এটা বুঝে নেয়া উচিত যে, আল্লাহ্‌ পাক অন্য স্থানে বলেছেনঃ “আচ্ছা! তোমাদেরকে সৃষ্টি করাই কি কঠিন কাজ, নাকি আসমান? আল্লাহ্‌ ওটা (এরূপে) নির্মাণ করেছেন যে, ওর ছাদ উঁচু করেছেন এবং ওকে সঠিকভাবে নির্মাণ করেছেন। আর ওর রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন ওর দিনকে প্রকাশ করেছেন এরপর জমীনকে বিছিয়ে দিয়েছেন। তা হতে পানি ও তৃণ বের করেছেন এবং পর্বত সমূহ স্থাপন করেছেন। (তিনি এসব কিছু করেছেন) তোমাদের ও তোমাদের পশুপালের উপকারের জন্যে।” [৭৯:২৭-৩৩]। এ আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন যে, তিনি আকাশের পরে যমীন সৃষ্টি করেছেন। [তাফসীর ইব্‌নে কাসীর, খণ্ড ১, ২, ৩, পৃঃ ২১৪]
ইব্‌নে কাসীর আরও লিখেছেন:
কেউ কেউ বলেছেন যে, পরবর্তী আয়াতটিতে আসমানের সৃষ্টির পরে যমীন বিছিয়ে দেয়া ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে, সৃষ্টি করা নয়। তাহলে ঠিক আছে যে, প্রথমে যমীন সৃষ্টি করেছেন, পরে আসমান। অতঃপর যমীনকে ঠিকভাবে সাজিয়েছেন। এতে আয়াত দু’টি পরস্পর বিরোধী আর থাকলো না। এ দোষ হতে মহান আল্লাহ্‌র কালাম সম্পূর্ণ মুক্ত। [তাফসীর ইব্‌নে কাসীর, খণ্ড ১, ২, ৩, পৃঃ ২১৪]
বোঝা যাচ্ছে, ইব্‌নে কাসীরের সময়ও আল্লাহ্‌র বিভ্রান্তিমূলক আয়াত নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে এবং ইসলামি পণ্ডিতগণ ইসলামকে রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে অর্থহীন যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন। 

দেখা যাক, আল্লাহ্‌ কী লিখেছেন ২:১১৭-এ:
২:১১৭ তিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের উদ্ভাবক। যখন কোন কার্য সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেটিকে একথাই বলেন, ‘হয়ে যাও’, তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
অর্থাৎ, প্রথমে নভোমণ্ডল, তারপর পৃথিবী বা ভূমণ্ডলের সবকিছু—সময় = ০ (শূন্য) দিন। 

ইব্‌নে কাসীর লিখেছেন:
সেই আল্লাহ্‌র ক্ষমতা ও প্রভাব ও প্রতিপত্তি এতো বেশী যে, তিনি যে জিনিসকে যে প্রকারের সৃষ্টি ও নির্মাণ করতে চান তাকে বলেন—‘এভাবে হও এবং এরকম হও’ আর তেমনই সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে যায়। যেমন আল্লাহ্‌ পাক বলেন:
অর্থাৎ ‘যখন তিনি কোন জিনিসের (সৃষ্টি করার) ইচ্ছে করেন, তখন তাঁর রীতি এই যে, ঐ বস্তুকে বলেন—‘হও’ আর তেমনই হয়ে যায়।’ (৩৬:৮২)
অন্য জায়গায় বলেন:
অর্থাৎ “যখন আমি কোন বস্তু (সৃষ্টির) ইচ্ছে করি তখন আমার কথা এই যে, আমি তাকে বলি—‘হও’ আর তেমনই হয়ে যায়।” (১৬:৪০)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছেঃ
অর্থাৎ “চোখের উঁকি দেয়ার মত আমার একটি আদেশ মাত্র।” (৫৪:৫০) [তাফসীর ইব্‌নে কাসীর, খণ্ড ১, ২, ৩, পৃঃ ৩৭৯]
আল্লাহর সৃষ্টি-বিভ্রান্তি নিয়ে একটি হাদিস উল্লেখ করা যেতে পারে।
‘আবদুল্লাহ্‌ ইবন্‌ ‘আমর ইবনুল ‘আস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ্‌পাক আকাশমণ্ডলী ও ভূখণ্ড সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে তাক্‌দীরসমূহ নির্ধারণ করে রেখেছেন। (মুসলিম, তাবারাণী ও তিরমিযী, তিনি হাদীসটি হাসান ও সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন।) [মুসনাদে আহমদ: প্রথম খণ্ড: তকদির অধ্যায়, পৃঃ ১০৩, হাদীস ১]
পঞ্চাশ হাজার বছর কে ৩৬৫ দিয়ে গুণ করলে আমরা পাই ১৮ ২৫০ ০০০ (১৮.২৫ মিলিয়ন) বা প্রায় ১.৮ কোটি দিন।

আর এদিকে কোরানে দেখা যাচ্ছে ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডল তৈরি করতে আল্লাহ্‌র লেগেছে মাত্র ছয় অথবা আট দিন।

আধুনিক কালে পশ্চিমা দেশে অবস্থানরত কিছু ইসলামি পণ্ডিত ব্যাপারটা টের পেয়ে বলতে শুরু করেছেন যে, আল্লাহ্‌র সৃষ্টি নিয়ে যে সব দিন উল্লেখ, তা আসলে দিন (অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার দিন) নয়। এগুলো হচ্ছে পর্ব—অর্থাৎ ছয় অথবা আট পর্ব।

তাজ্জবেরই কথা—যেখানে প্রায় সমস্ত প্রখ্যাত অনুবাদক এবং তাফসিরবিদ্গণ এই সময়কে দিনই বলেছেন, সেখানে নাম না জানা কিছু ইসলামি পণ্ডিত কোরানের বিরুদ্ধেই লিখে চলেছেন!

আয়াত ১০:৩ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত তফসিরবিদ জালালাইন লিখেছেন যে, এই সময় নির্ণয় করা হয়েছে সেইভাবে, যেভাবে পৃথিবীর সময় নির্ণয় করা হয়, সেইভাবে যেহেতু তখন কোনো সূর্য বা চন্দ্র ছিল না। [তাফসির জালালাইন ইংরাজি, আয়াত ১০:৩, অনুবাদ লেখকের]

এর অর্থ হচ্ছে সৃষ্টির ছয় দিন হচ্ছে, ৬ গুণ ২৪ = ১৪৪ ঘণ্টা।

আট দিন হচ্ছে ৮ গুণ ২৪ = ১৯২ ঘণ্টা।

কিসের প্রয়োজন ছিল এতদিন অপেক্ষা করে (১.৮ কোটি দিন) বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করার, যখন আল্লাহ্‌ এক নিমেষেই সবার তকদীর নির্ধারিত করে দিতে পারেন সৃষ্টির সাথে সাথে?

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন