আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১১

ডিপ্লোমা ইন ধান্ধাবাজি সায়েন্স অ্যান্ড তদবির


লিখেছেন ফাইজুল হক জায়েদ

ফুঁ / পানি পড়া / তেল পড়া দিয়ে রোগ ভালো করতে চান? শিখে নিন! এক্সক্লুসিভ কোর্স!

এই গোপন বিদ্যা শিখতে আপনার যে যোগ্যতা লাগবে: আপনার থাকতে হবে চতুর একটা মাল, মানে চামচা। আপনি যে-ধর্ম অনুসরণ করেন, সেই ধর্মের লেবাস। সাথে আমার লেখাটা ভালো করে বোঝা। আপনার লেখাপড়া কতটুকু, সেটা ফ্যাক্টর না। আপনি কতটুকু ধান্ধাবাজ ও চালাক, সেটাই ফ্যাক্টর।

আসুন শুরু করি “ডিপ্লোমা ইন ধান্ধাবাজি সায়েন্স অ্যান্ড তদবির”।

আপনি ওই চামচাটা দিয়ে এলাকায় প্রচার করান যে স্বপ্নে বা কোনো এক গুরুর কাছ থেকে দীক্ষা পেয়েছেন এবং সব রোগ/বিপদ/সমস্যা আপনার তদবিরে ভালো হয়। অথবা আপনি জ্বিন হাসিল করেছেন, জ্বিন আপনার অনুগত। আপনি যত বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রচার চালাবেন, তত বেশি রোগী আসবে ও ভালো হবে। হ্যাঁ, ভালো হবে সাময়িক সময়ের জন্য, কীভাবে? বলব একটু পরেই। আপনি শিক্ষিত হলে আরো ভালো, তাহলে শিক্ষিত ছাগলদের পটাতে সুবিধা হবে ।

প্রথম অবস্থায় টাকা পয়সা চাইবেন না, বলবেন যার যা খুশি তা দিতে, এটা বিশ্বাস অর্জনের একটা সহজ উপায়। চোখ বন্ধ করে ফুঁ / পানি পড়া / তেল পড়া দিন। ভয় পাবেন না, রোগ ভালো হবেই, আর এই ভালো হবার বৈজ্ঞানিক সত্য হল, রোগীর “অন্ধবিশ্বাস” - চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় “প্লাসিবো” চিকিৎসার ফল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সাময়িক উপশম দেয়। আর রোগী মনে করে বাবারে পাইছি, এভাবে চলে প্রচার ।

সর্পরাজ, গুরু সম্রাট, স্বপ্নে পাওয়া, সংকটমোচন ইত্যাদি আধ্যাত্মিক বাবারা, মায়েরা এই সব ভাওতাবাজি করে পেট চালাচ্ছে। রোগ সৃষ্টি ও নিরাময়ের ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্বাসবোধের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের বহু রোগের উৎপত্তি হয় - ভয়, ভাবনা, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ইত্যাদি থেকে। মানসিক কারণে বহু অসুখই হতে পারে, যেমন- মাথাধরা, হাড়ে ব্যথা, বুক ধড়ফড়, ব্লাডপ্রেসার, কাশি, এজমা, পেটের গোলমাল, আলসার, কামশীলতা, পুরুষত্বহীনতা, শরীরের কোনো অঙ্গের অসাড়তা, কৃশতা, এমনি আরো অসংখ্য রোগ মানসিক কারণে হতে পারে। এইসব রোগের ক্ষেত্রে অনেক সময় চিকিৎসকরা মূল্যহীন ঔষধ (ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সিরাপ, ইনজেকশন) প্রয়োগ করে রোগীকে এটা বিশ্বাস করান যে, তাকে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগমুক্ত করা হচ্ছে। এই ধারণা রোগীর মনে সৃষ্টি করে রোগীকে আরোগ্যের পথে নিয়ে যান। রোগীর মনে বিশ্বাসনির্ভর এই চিকিৎসাই হল প্ল্যাসিবো। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ধান্ধাবাজি শুরু করবেন। রোগীকে বলবেন - তোমার কোনো শত্রু তোমাকে বান মেরেছে , বা খারাপ জ্বিনের নজর লেগেছে। তন্ত্র-মন্ত্র (তন্ত্র-মন্ত্র বলতে কিছু নাই , সব ভুয়া) দিয়ে তোমার জ্বিন ছাড়াবো বা বান কাটাবো । নাহলে এই সমস্যার ফলে মুখে রক্ত উঠে তোমার কেল্লাফতে হয়ে যাবে। দেখবেন ভয়ে রোগীর কাপড় নষ্টের অবস্থা হয়ে যাবে। আর আপনি তাকে বিশাল অংকের টাকা দাবি করলেও রোগী জীবন বাঁচাতে আপনার কথা মেনে নেবে ।

বেশি চালাক ও পয়সাওয়ালা রোগী হলে পাথর বিক্রির চেষ্ঠা করতে পারেন। ১ পাথর কিনবেন ১০/২০ টাকা বেচবেন ২০০০০ থেকে ১০০০০০ টাকায়। আহ! এত্ত টাকা কী করবেন ? আমারে মাঝে মাঝে দাওয়াত দিয়েন। পাথর-মাদুলী , তাবিজ-কবজ, পানি/তেল/ফুল পড়া সব ভণ্ডামি। শরীরের ওপর ধাতুর কোনো প্রভাব নাই। অনেকে অষ্ট ধাতুর আংটি ব্যবহার করে। বাবাজীর কৃপা পাওয়া অন্ধবিশ্বাসীদের দ্বারা বাবার মাহাত্ম ছড়িয়ে পড়ে। আপনারও মাহাত্ম ছড়িয়ে পড়বে, আর চলতে থাকবে বংশের পর বংশ...।

দু’-একটা ম্যাজিক জানা থাকলে লোকদেরকে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা বলে চালিয়ে দেবেন (ধরা খাইলে কিন্তু খবর আছে) একটা ম্যাজিক বলে দিচ্ছি: 

মুখের মধ্যে খাটি গ্লিসারিন নিন বেশ খানিকটা , লোকদের সামনে থুথুর মত কিছুতে (যেমন, কাপড়) ফেলুন, হাতের আঙুলে গোপনে “পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট” রাখুন, এবার আপনার ফালানো থুতুর উপর হাত নাড়ানোর ভঙ্গি করে পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট ফেলুন , কিছুক্ষণের মধ্যে দেখবেন, আগুন জলে উঠছে । এটা খোদার কুদরত বলে চালিয়ে দিন। বোকা দেখে কিছু মুরিদ বানান । গোপন বিদ্যা কাউকেও বলবেন না। বউকেও না। কেউ শিখতে চাইলে বলবেন এসব সাধনার বিষয়। ১২ বছর সাধনা করা লাগবে। মুরিদরাই দান খয়রাতের মাধ্যমে আপনাকে কোটিপতি করে ফেলবে । এবার আপনাকে ঠেকায় কে! 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন