আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

খায়বার যুদ্ধ - ১২: কিনানা বিন আল-রাবিকে নির্যাতন ও খুন!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১৪১): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত পনের

লিখেছেন গোলাপ

(আগের পর্বগুলোর সূচী এখানে)

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।" 

মানব ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ ও দুঃখজনক ইতিহাসের একটি হলো ক্রীতদাস-দাসী প্রথার প্রচলন ও প্রসার! এই প্রথায় একজন মুক্ত মানুষ বংশ বংশানুক্রমে পরিণত হতেন অন্য একজন মানুষের "ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে", অন্যান্য গৃহপালিত গবাদি পশুর মতোই। একবার এই অবস্থায় রূপান্তরিত হওয়ার পর, সেই মানুষটির স্বাধীন সত্তা হতো পুরোপুরি রহিত। তিনি তখন মুক্ত মানুষ থেকে রূপান্তরিত হতেন তাঁর মালিকের ইচ্ছার বাহন। যে প্রক্রিয়ায় একজন মানুষ এই দুঃসহ অবস্থার শিকার হতেন, তার আদি উৎস “মাত্র একটি!" আর তা হলো, আদি-তে এই মানুষগুলো কিংবা তাঁদের পূর্বপুরুষদের কোনো এক বা একাধিক মুক্ত মানুষকে কোনো এক 'শক্তিধর মানুষ'তার উন্মুক্ত শক্তি প্রয়োগে জোরপূর্বক বন্দী করে অথবা তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি, অর্থবল বা প্রতারণার মাধ্যমে (পর্ব: ৭৯) রূপান্তরিত করেছেন এই দুঃসহ জীবনে। অতঃপর তারা তাঁদেরকে রেখেছেন নিজেদের সম্পত্তিরূপে, অথবা তাঁদের বিক্রি বা দান করেছেন অন্যের কাছে। অতঃপর, তাঁদের আমৃত্যু পরিণতি এক মনিব থেকে অন্য মনিবের কাছে একই প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর ও দুঃসহ জীবন! বংশ বংশানুক্রমে! আদি উৎসে মুলতঃ এই শক্তিধর মানুষরাই ছিলেন 'ক্রীতদাস-দাসী" প্রথার মূল জোগানদার (Supplier) ও চালিকাশক্তি। মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ছিলেন এই দলেরই প্রতিনিধিত্বকারী! উন্মুক্ত শক্তিবলে অমানুষিক নৃশংসতায় স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীরা কীভাবে মুক্ত মানুষদের বন্দী করে তাঁদেরকে এই দুঃসহ জীবনের অন্তর্ভুক্ত ও বাজারজাত (Marketing) করে দাসপ্রথার প্রসার ঘটিয়েছিলেন, তা আদি উৎসের মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় অত্যন্ত স্পষ্ট - যার আলোচনা গত পর্বে করা হয়েছে। “দাসপ্রথার” ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইসলামের অবদানকে যদি এক বাক্যে প্রকাশ করা হয়, তবে তা হবে এই:

"অবিশ্বাসী জনপদের মুক্ত মানুষদের জোরপূর্বক বন্দী করে ধরে নিয়ে এসে তাঁদেরকে দাস-দাসী রূপে রূপান্তর, সরবরাহ ও বাজারজাত করার মাধ্যমে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ দাসপ্রথার উন্নতি ও প্রসারে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছিলেন।"

মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খ্রিষ্টাব্দ), আল-তাবারী (৮৩৯ -৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ), আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ) প্রমুখ আদি উৎসের বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকরা 'খায়বার যুদ্ধ' উপাখ্যানের পরবর্তী ঘটনা প্রবাহের যে প্রাণবন্ত বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন, তা মুহাম্মদের মদিনা জীবনের অসংখ্য নৃশংসতার আর একটি উদাহরণ হিসাবে ইসলামের ইতিহাসেই পাতায় সাক্ষ্য হয়ে আছে। এই অমানুষিক নৃশংস ঘটনার সবচেয়ে বিস্তারিত বর্ণনা (পর্ব-১৩৪) লিপিবদ্ধকরছেন আল-ওয়াকিদি, তাঁর “কিতাব আল-মাগাজি' গ্রন্থে।

আল-ওয়াকিদির (৭৪৮-৮২২ খ্রিষ্টাব্দ) অব্যাহত বর্ণনার পুনরারম্ভ: [1] [2] [3]
পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব: ১৪০) পর:

'কিনানা ইহুদিদের মধ্যে থেকে শামাখ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে আল্লাহর নবীর কাছে যে-বার্তা পাঠায়, তা হলো, "আমি কি তোমার কাছে আসতে পারি ও কথা বলতে পারি?" যখন শামাখ আসে, মুসলমানরা তাকে আল্লাহর নবীর কাছে নিয়ে আসে ও সে তাঁকে অভিবাদন জানায় ও তাঁকে কিনানার বার্তাটি শোনায়, তিনি তার প্রতি ছিলেন সদয়। একদল ইহুদির সঙ্গে কিনানা আসে ও আল্লাহর নবীর সঙ্গে তাঁর চুক্তি মোতাবেক ও তাঁর শর্ত অনুযায়ী শান্তি স্থাপন করে। ইবরাহিম যা বলেছে, তা হলো, ধনুক ও যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মালিক ছিল আবু আল-হুকায়েকের পরিবারের ও তারা এগুলো বাইরের আরবদের কাছে ভাড়া দিয়েছিলো। তারা তাদের অলংকারগুলোও বাইরে আরবদের কাছে ভাড়া দিয়েছিলো। তারা ছিলো মদিনার সবচেয়ে খারাপ ইহুদি।----- ইবনে আবি আল-হুকায়েক সেখানে আসে ও আল্লাহর নবীর সাথে যে-চুক্তিটি করে তা হলো,

[১] তিনি দুর্গ মধ্যে অবস্থিত সৈন্যদের হত্যা করবেন না ও তাদের সন্তানদের ছেড়ে দেবেন।

[২] তারা তাদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ, যেমন সোনা, রূপা, তূণী, অস্ত্রশস্ত্র ও তাদের পরিধানে ছাড়া যাবতীয় বস্ত্রসামগ্রী আল্লাহর নবীর কাছে পরিত্যাগ করে তাদের সন্তানদের নিয়ে খায়বার ও তার অঞ্চল থেকে চলে যাবে।

আল্লাহর নবী বলেন: যদি তুমি আমার কাছে কোনোকিছু গোপন করো, তবে আল্লাহ ও তার নবী তোমার নিরাপত্তার দায় পরিহারকরবে। ইবনে আবি আল-হুকায়েক এ ব্যাপারে তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়। সম্পদগুলো হস্তগত করার জন্য আল্লাহর নবী লোক পাঠান ও একে একে তা হস্তগত করেন। অস্থাবর সম্পদ ও অস্ত্রশস্ত্র হস্তগত করার জন্য তিনি লোক পাঠান ও সেগুলো তিনি তার নিজের কাছে রাখেন। তিনি যা হস্তগত করেন, তার মধ্যে ছিলো একশত বর্ম আবরণ, চার শত তরবারি, এক হাজার বর্শা ও পাঁচ শত ধনুক ও তার তূণী। আল্লাহর নবী কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক-কে আবু আল-হুকায়েকের পরিবারের অর্থ-ভাণ্ডার, তাদের সর্বপ্রকার অলংকার ও উটের চামড়ার থলিতে যা ছিল, সে সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেন। এগুলোর ছিলো তাদের আভিজাত্যের পরিচিতি। যখন মক্কায় কোনো বিবাহ উৎসব হতো, তারা তার জন্য তাদের কাছে আবেদন করতো, অতঃপর এই অলংকারগুলো তাদের কাছে এক মাস যাবত রাখার জন্য ধার দেওয়া হতো। এই অলংকারগুলো আবু আল-হুকায়েক-এর পরিবারের এক প্রধান থেকে আরেক প্রধানের কাছে গচ্ছিত থাকতো।

সে জবাবে বলে, "হে আবু আল-কাসেম, আমাদের যুদ্ধের সময় আমরা তা খরচ করে ফেলেছি ও সেগুলোর কোনোকিছুই আর অবশিষ্ট নেই। আমরা এই রকম একটি দিনের লোকসান বাঁচানোর জন্য তা করেছি। যুদ্ধ ও যোদ্ধাদের খোরাক সরবরাহ কিছুই অবশিষ্ট রাখেনি।" তারা এ বিষয়ে শপথ করে, তাদের শপথ নিশ্চিত করে ও তা প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা করে। আল্লাহর নবী তাকে বলেন, "এটি যদি তোমার কাছ থেকে খুঁজে পাত্তয়া যায়, তবে আল্লাহ ও তার নবী তোমার নিরাপত্তা প্রত্যাখ্যান করবে।" সে তাতে রাজি হয়।অতঃপর   আল্লাহর নবী বলেন, "তোমার সমস্ত সম্পদ আমি হস্তগত করেছি, তোমার জীবন এখন আমার হাতে ও তোমাকে রক্ষা করার কেউ নেই।” সে বলে, "হ্যাঁ।" অতঃপর আল্লাহর নবী আবু বকর, উমর, আলী ও দশ জন ইহুদিকে এই চুক্তির সাক্ষী রাখেন।

ইহুদিদের মধ্যে থেকে এক লোক কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক-এর কাছে আসে ও বলে, "মুহাম্মদ যার খোঁজ করছে, তা যদি তোমার কাছে থাকে, কিংবা তার হদিস যদি তোমার জানা থাকে, তবে তাকে জানাও; কারণ তাহলে তুমি নিশ্চয়ই তোমার জীবন রক্ষা করতে পারবে। যদি তা না করো, আল্লাহর কসম, সেটি তার দৃষ্টিগোচর হবে। সে অন্যান্য অনেক বিষয়ে জানতে পেরেছে, যা আমরা জানতাম না।" ইবনে আবি আল-হুকায়েক তাকে ধমক দেয় ও ইহুদিটি সরে দাঁড়ায় ও বসে পড়ে।

অতঃপর আল্লাহর নবী থালাবা বিন সাললাম বিন আবি আল-হুকায়েক-কে তাদের এই ধন ভাণ্ডার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেন, সে ছিল এক দুর্বল প্রকৃতির লোক। সে জবাবে বলে, "আমি একমাত্র যেটুকু জানি, তা হলো, প্রতিদিন সকালে আমি কিনানা-কে এই ধ্বংসাবশেষগুলোর আশেপাশে যেতে দেখতাম," ও সে সেই ধ্বংসাবশেষ এর দিকে আঙুল দিয়ে দেখায়; "যদি কোনোকিছু থাকেও, তা সে মাটি চাপা দিয়ে রাখে, তা সেখানে আছে।"

যখন আল্লাহর নবী নাটা দখল করেছিলেন, কিনানা বিন আবি আল-হুকায়েক অনুধাবন করেছিলেন যে, ধ্বংস অনিবার্য। নাটার অধিবাসীদের পরাজিত করা হয়েছিল ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে। অতঃপর সে উটের চামড়া নির্মিত থলিতে করে অলংকারাদি নিয়ে ধ্বংসাবশেষের ওখানে গিয়েছিলো ও রাত্রিকালে মাটি খনন করে তা লুকিয়ে রেখেছিলো, যা কেউই দেখেনি। অতঃপর সে আল-কাতিবার ধুলাবালি দিয়ে তা মাটি সমান করে রেখেছিলো। এই ধ্বংসাবশেষগুলো সেই, প্রতিদিন সকালে যার চারপাশে থালাবা তাকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছিলো।

আল্লাহর নবী আল-যুবায়ের বিন আল-আওয়াম ও একদল মুসলমান কে থালাবার সঙ্গে ঐ ধ্বংসাবশেষের উদ্দেশ্যে পাঠান। যে স্থানটি থালাবা দেখায়, সে সেখানে খনন করে তার মধ্য থেকে সেই ধনভাণ্ডার টেনে তোলেন। কিছু লোকে বলে: প্রকৃতপক্ষে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার নবীকে এই ধনভাণ্ডার প্রদর্শন করে। ধনভাণ্ডারটি বাইরে নিয়ে আসার পর, আল্লাহর নবী কিনানা-কে নির্যাতন করার জন্য আল-যুবায়েরকে হুকুম করেন, যতক্ষণে না সে তার কাছে যা কিছু আছে. তার সবকিছুর সন্ধান না জানায়। আল-যুবায়ের তাকে নির্যাতন করে: সে এক জ্বলন্ত কাষ্ঠখণ্ড নিয়ে তার কাছে এগিয়ে আসে ও তা তার বুকে বিদ্ধ করে। তারপর আল্লাহর নবী হুকুম করেন যে, সে যেন তাকে মুহাম্মদ বিন মাসলামার কাছে হস্তান্তর করে, যাতে সে তার ভাইয়ের হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে হত্যা করে; মুহাম্মদ বিন মাসলামা তাকে হত্যা করে। তিনি হুকুম করেন যে অপর ইবনে আবি আল-হুকায়েক কে (কিনানার ভাই) ও যেন নির্যাতন করা হয় ও অতঃপর তাকে বিশর বিন আল-বারার কাছে হস্তান্তর করা হয়, যাতে সে তাকে হত্যা করতে পারে। কিছু লোক বলে যে, সে তার কল্লা কেটে ফেটেছিল। তারপর আল্লাহর নবী অনুভব করেন যে, তাদের সম্পদের ওপর তাঁর অধিকার আছে, তিনি তাদের সন্তানদের বন্দী করেন।---' 

- অনুবাদ, টাইটেল, [**] ও নম্বর যোগ - লেখক।

>>> আদি উৎসে আল-ওয়াকিদি, মুহাম্মদ ইবনে ইশাক  ও আল-তাবারীর ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা খায়বারের ইহুদিদের পরাস্ত ও বন্দী করার পর তাঁদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তগত করেন। আল-কাতিবা দখল করার পর  অনন্যোপায় খায়বার জনপদবাসীদের পক্ষে কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক নামের এক লোক মুহাম্মদের কাছে তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। মুহাম্মদ তাঁর সাথে এই চুক্তিতে রাজি হন যে, যদি তাঁরা তাঁকে তাদের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করে, তবে তিনি তাদেরকে হত্যা না করে তাঁদের সন্তানদের নিয়ে খায়বার ও তার আশেপাশের অঞ্চল থেকে বিতাড়িত হওয়ার সুযোগ দেবেন। খায়বারের জনগণের পক্ষে কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক মুহাম্মদের এই প্রস্তাবে রাজি হন। অতঃপর মুহাম্মদ কিনানা-কে তাঁর পরিবারের সঞ্চিত ধনভাণ্ডার তাঁর কাছে হস্তান্তর করার আদেশ করেন। পরিবারের এই সঞ্চিত ধনভাণ্ডার রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন কিনানা। প্রত্যুত্তরে কিনানা মুহাম্মদকে জানায় যে, সেই ধনভাণ্ডারের কোনোকিছুই এখন আর অবশিষ্ট নেই, সবকিছু খরচ হয়ে গিয়েছে - যা ছিলো মিথ্যা। সত্য হলো, পরাজয় নিশ্চিত জেনে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা আল-কাতিবা আক্রমণ করার আগেই কিনানা তাঁদের পরিবারের এই ধনভাণ্ডারটি একটি ধ্বংসাবশেষের মধ্যে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিলেন ও প্রতিদিন সকালে তিনি এর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতেন। থালাবা বিন সাললাম নামের কিনানার পরিবারেরই এক লোক সেই স্থানে কিনানার এই ঘোরাঘুরির বিষয়টি দেখে ফেলেছিলেন। পরবর্তীতে থাালাবার সাহায্যে মুহাম্মদ এই গুপ্তধনটির সাক্ষাৎ পান ও তা হস্তগত করেন এবং এই অপরাধ ও কিনানার কাছ থেকে আরও তথ্য আদায় করার জন্য মুহাম্মদের আদেশে তাঁর অনুসারীরা এই লোকটি ও তাঁর ভাইকে অমানুষিক নির্যাতন ও হত্যা করেন। আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যা সুস্পষ্ট, তা হলো, কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক নামের এই লোকটির অপরাধ ছিলো এই যে, তিনি তার পরিবারের সঞ্চিত ধনভাণ্ডার মুহাম্মদের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন।

কে এই কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক?

কিনানা বিন আল-রাবি বিন আবুল হুকায়েক ছিলেন মদিনায় অবস্থিত বনি নাদির গোত্রের এক নেতা, যাদেরকে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদের শত শত বছরের আবাসভূমি থেকে প্রায় একবস্ত্রে বিতাড়িত করেছিলেন। কী অপরাধে মুহাম্মদ এই গোত্রের সমস্ত মানুষকে মদিনা থেকে বহিষ্কার করেছিলেন, তার বিস্তারিত আলোচনা “বনি নাদির গোত্র উচ্ছেদ: শেষদৃশ্য!” (পর্ব: ৭৫) পর্বে করা হয়েছে। মুহাম্মদের এই নৃশংসতার বৈধতা প্রদানে ইসলাম বিশ্বাসী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা যে অজুহাতসচরাচর হাজির করেন তা হলো,

১) কিনানা মিথ্যা বলেছিলেন
২) সে মুহাম্মদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে সেই চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন।

What a Joke!

>> অতর্কিত আক্রমণে এক বিস্তীর্ণ জনপদের লোকদের অমানুষিক নৃশংসতায় খুন, জখম ও বন্দী করে তাদের সমস্ত সম্পত্তি হস্তগত করছে একদল সন্ত্রাসী! তাঁদের স্ত্রী-কন্যা-মা-ভগ্নীদের বন্দী করে তাঁদেরকে রূপান্তরিত করছে যৌনদাসীরূপে। তাঁদেরকে পরাস্ত ও পর্যুদস্ত করার পর তাঁদেরকে বাধ্য করছে চুক্তি স্বাক্ষর করতে। এই অনন্যোপায় জনগোষ্ঠী জীবন বাঁচানোর তাগিদে করেছে এক চুক্তি। এমতাবস্থায় তাঁদের একজন তাঁদের নিজস্ব পরিবারের সঞ্চিত ধনভাণ্ডার এই ডাকাত সর্দারের কাছ থেকে রক্ষার প্রাণান্তকর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নির্যাতিত ও খুন হয়েছেন অমানুষিক নৃশংসতায়। এই পরিস্থিতিতে ডাকাত সর্দারের সেই অমানুষিক নৃশংসতার বৈধতার অজুহাত:

"কেন সেই লোকটি তথ্য গোপন করে ঐ ডাকাত সর্দারের কাছে থেকে তাঁদের সম্পত্তি রক্ষা করতে চেয়েছিলেন!"

আগেই বলেছি, যে সমস্ত ইসলাম অনুসারী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত বিভিন্ন অজুহাতে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের অমানবিক ও অমানুষিক নৃশংস বর্বরতার সপক্ষে নির্লজ্জ গলাবাজি করে চলেছেন, তাদের ও তাদের পরিবারকেও যদি অন্য কোন তথাকথিত কামেল-পীর-ফকির-গুরু-বাবাজী ও তার চেলা-চামুন্ডেরা একইরূপ অজুহাতে একইভাবে খুন ও দাস-দাসীতে রূপান্তর করে ভাগাভাগি করে নেন, তাহলেই, বোধ করি, তারা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারবেন (পর্ব: ৫২)

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে আল-ওয়াকিদির মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। ইবনে ইশাকের মূল ইংরেজি অনুবাদ ইন্টারনেটে বিনামূল্যে ডাউনলোড লিঙ্ক: তথ্যসূত্র [2]

The detailed narrative of Al-Waqidi (continued): [1] [2] [3]

‘Kinana sent a man from the Jews named Shammakh to the Prophet saying, “May I come to you and speak with you?” When Shammakh arrived, the Muslims brought him to the Prophet and he greeted him and he informed him of the Message of Kinana, and he was gracious to him. Kinana arrived with a group of Jews and made a peace with the Prophet in accordance with his agreement, and contracted with him according to his terms. Ibrahim said that the bow and weapons belonged to the family of Abu Al-Huqayq and they hired them out to the Arabs. Their Jewelry was also hired out to the Arabs. They were the most evil of the Jews of Yathrib. -----      

Ibne Abi Al-Huaqayq came down and made an agreement with the Messenger of God, that he spare the blood of the soldiers who were in the fortress and leave their children from them. They set out from Khaybar and its land, with their children, and they relinquished all they possessed of property or land to the Messenger of God such as gold, silver, quivers, weapons, and cloth, except for the garments worn by the people. The Messenger of God said: The protection of God and His messenger is relinquished from you if you conceal anything from me. And Ibn Abi al-Huqayq agreed with him about that. The Messenger of God sent for the wealth and took it one by one. He sent for the chattels and the weapons and he kept them, and he found among the coats of mail a hundred coats, four hundred swords, a thousand spears, and five hundred bows with their quivers.

The Messenger of God asked KInana b. Abi Al-Huqayq about the treasure of the family of Abu al-Huqayq, and the jewelry from their Jewelry, and what there was of the skin of the camel. Their nobility was known by it. When there was a wedding in Mecca they would approach them; and the Jewelry would be loaned to them for a month when it would be with them. The Jewelry was with the one lord after the other from the family of Abu al-Huqayq.

He replied, “O Abu al-Qasim, we spent it during our war and there does not remain anything from it. We saved it for such a day as this. The war and provisions for the warriors left nothing behind.” They took an oath about that, and they affirmed their oath, and they strove. The Messenger of God said to him, “The protection of God and His prophet will be denied you if it is discovered with you.” And he agreed. Then the Messenger of God said, “All that I took from your property and your blood is released to me, and there will be no protection for you!” He said, “Yes.” Then the Messenger of God asked Abu Bakr, Umar, Ali and ten Jews to witness the agreement.

A man from the Jews went to Kinana b. Abi al-Huqayq and said, “If you have what Muhammad is seeking from you or you know of it, inform him, for surely you will protect your blood. If not, by God, it will appear to him. He has come to know about other things we did not know.” Ibn Abi al-Huqayq scolded him, and the Jew stepped aside and sat down. Then the Messenger of God asked Thalaba b Sallam b Abi al-Huqayq, who was a weak man, about their treasure. He replied, “I only know that I used to see Kinana, every morning, go around these ruins,” and he pointed to the ruins, “if there was something and he buried it, it is in there.” Kinana b Abi al-Huqayq had, when the Messenger of God was successful over Nata, ascertained the destruction. The people of Nata were taken by fear, and he went with the skin of the camel containing their Jewelry, and he dug for it in the ruins by night and no one saw him. Then he leveled it with the dust of al-Katiba. These were the ruins that Thalaba saw him go around every morning.

The prophet sent al-Zubayr b. al-Awwam and a group of Muslims with Thalaba to those ruins. He dug where Thalaba showed him, and he pulled out from it that treasure. Some say: Indeed, God most high showed His messenger that treasure. When the treasure was taken out, the Messenger of God commanded al-Zubayr to hurt Kinana b Abi al-Huqayq until he revealed all that he had with him. Al-Zubayr hurt him: he came to him with a firebrand and pierced him in his chest. Then the Messenger of God commanded that he hand him to Muhammad b Maslama to kill him for his brother, and Muhammad b Maslama killed him. He commanded that the other Ibn Abi al-Huqayq (the brother of Kinana) also be tortured and then handed over to the care of Bishr b al-Bara to be killed by him. Some say that he cut of his head. After that the Messenger of God felt he had the right to their property and imprisoned their children.’---

(চলবে)

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1]“কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক:  আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৬৭০-৬৭৩; ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ৩৩০-৩৩১

[2] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫১৫

[3] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮,ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৮২-১৫৮৩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন