আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭

বিশ্বাসের দরজায় করাঘাত!: পর্ব ১৮ – (তোর কী হবে রে, হিমু!)

লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ


গাঁও-গেরামের মানুষ আমি, ঢাকা এলেই কেমন জানি দমবন্ধ লাগে! অন্তর্মুখী মানুষ হিসেবে পোশাক-আশাক, লৌকিক অনুষ্ঠান খুব একটা ভালো লাগে না আমার! যাক এসব আত্মপ্রচার; আসল কথায় আসি। ২০০৮ সালের ঘটনা, ঢাকায় দু'দিনের জন্য জরুরি কাজে খালাতো ভাইয়ের বাসায় ছিলাম। শুক্রবার বিকেলে বিছানায় শুয়ে শুয়ে পড়ছিলাম, হঠাৎ খালাতো ভাই ধরে নিয়ে গেলো হুমায়ূন আহমেদের ভক্তদের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে! গিয়ে পড়লাম মহা ফাঁপরে; শালার খালাতো ভাইসহ সবাই হলুদ রংয়ের পাঞ্জাবি পরে এসেছে। মাঝখানে আমি কালো একটা টিশার্ট পরে পোকার মত কিলবিল করছি! শেষতক বুঝলাম, এটা হিমু-ভক্তদের মিলনমেলা!

শালার ভাইরে কইলাম: "আমি তো জীবনে হুমায়ূন আহমেদের হ পর্যন্ত পড়ি নাই! আমারে নিয়া আসলি কোন দুঃখে! আর আনলি যখন এই কালো টিশার্ট পরে আসতে দিলি কেন! আগে কইলে আর কিছু না পারি, আমার কাছে গু কালারের একটা টিশার্ট ছিলো, সেটা পরে আসতাম! হলুদ আর গু কালার তো প্রায় কাছাকাছি যায়!"

আলোচনা পর্ব চলছিলো; সবাই গুণগান করছিলেন হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্র হিমুর! অনেকেই আড়চোখে দেখছিলো আমাকে! এর মাঝে একজন মাইকে বলেই ফেললো, “আমাদের মাঝে একজন কালো রঙের ভাই আছেন! তিনি সম্ভবত হিমু, হুমায়ূন আহমেদ আর আজকের অনুষ্ঠান সম্পর্কে না জেনেই চলে এসেছেন! এবার তিনি আমাদের সামনে কিছু বলবেন!" আমি বুঝলাম, আমাকে বাঁশ দেবার চেষ্টা হচ্ছে, মনে মনে বললাম, “আমারে তো চেনো না বান্দরের (হিমুর) দল! বাঁশ আমি উল্টো দেওয়াও জানি!"

ডায়াসে দাঁড়িয়ে:  
"উপস্থিত বন্ধুরা, সকলকে জন্ডিসীয় ‍শুভেচ্ছা! আজকের অনুষ্ঠানে এসে আমার প্রথম উপলব্ধি যেটা হলো: হলুদের আধিক্যে এই রুমের সবার হয়ত জন্ডিস হয়েছে! জন্ডিসের বাংলা অর্থ সম্ভবত 'ন্যবা', সে হিসাবে আপনারা সকলেই আজ ন্যবার রোগী! আমি হুমায়ূন না-পড়া একজন পাঠক, তাই হিমু বা হুমায়ূন নিয়ে বেশি বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়! আপনারদের সকলের তাঁর লেখার প্রতি ভক্তি দেখে সত্যিই মুগ্ধ হচ্ছি! এবং আপনারা তার সৃষ্টি একটি চরিত্রের প্রতি এতটা নেশাগ্রস্ত দেখে অবাকও হচ্ছি! হয়ত উপস্থিত আপনারা প্রায় সবাই মুসলিম ঘরের সন্তান! যদি আপনারা হলুদ রঙের পোশাকের প্রতি নবী মুহাম্মদের মনোভাব জানতেন, তবে হয়ত অনেকেই হলুদ রঙের পোশাক পরে হিমু হতে দ্বিধাগ্রস্ত হতেন! কারণ:

নবী ‍মুহাম্মদ হলুদ পোশাক পরতে নিষেধ করেছেন!
আলী ইবনে আবু তালিব বলেন নবী মুহাম্মদ আমাকে রুকু অবস্থায় কুরআন তিলওয়াত করতে, সোনার অলংকার ব্যবহার করতে এবং হলুদ বর্ণের পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করেছেন
সহিহ মুসলিম: হাদিস ৫৩৩১ (ই.ফা. ৫২৬৪, ই.সে. ৫২৭৭)

নবী ‍মুহাম্মদ হলুদ পোশাক জ্বালিয়ে দিতে বলেছেন!
আবদুল্লাহ ইবনে আমর থেকে বর্ণিত: নবী মুহাম্মদ আমার পরনে হলুদ বর্ণের দু'খানা কাপড় দেখলেন । তিনি বললেন: তোমার মা কি তোমাকে এ কাপড় পরিধান করতে বলেছে? আমি বললাম, আমি কি এ দুটো ধুয়ে নেব? তিনি বললেন: তুমি এ দুটো বরং জ্বালিয়ে দাও
সহিহ মুসলিম: হাদিস ৫৩২৯ (ই.ফা. ৫২৬২, ই.সে. ৫২৭৫)

তো: উপস্থিত হিমু ভাইয়েরা, কোনো কিছুর প্রতি ভালো লাগা থাকা ভালো, তবে তা যদি আপনার নিজস্ব মৌলিকতাকে নষ্ট করে, তবে তা অনুকরণ করা সব সময় সুখকর নয় - তা সে যা-ই হোক না কোনো! আপনার মন যখন চায়, যে কোনো রংয়ের পোশাক পরতে পারেন, তবে তা যদি হিমুর নামে আপনার স্বকীয়তাকে নষ্ট করার পর্যায়ে চলে যায়, তবে আমার মত কালো বহিরাগত মানুষ নবী মুহাম্মদের উদাহরণ টেনে একথা বলতেই পারে, তোর কী হবে রে, হলুদ হিমু!... আজকের অনুষ্ঠানে আমার মত উটকো ঝামেলাকে কথা বলতে দেবার জন্য ধন্যবাদ!"

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন